নয়াদিল্লি: একদফা গোলাগুলি ছোড়াছুড়িতেই সব মিটে যাবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ইজরায়েল বনাম প্যালেস্তিনীয় সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধ ১০০ দিন পূর্ণ করল। গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের উদ্দেশে রকেট ছোড়ে হামাস। তার পর যত দিন এগিয়েছে, ততই ঘোরাল হয়েছে পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলেও বিভাজন তৈরি হয়েছে। আমেরিকা, ফ্রান্সের মতো দেশ যেখানে ইজরায়েলকে সমর্থন করছে। আরব দুনিয়া আবার প্যালেস্তাইনের পাশে। ইজরায়েল গাজায় ঢুকে সাধারণ মানুষকে কচুকাটা করছে বলে অভিযোগ এনে, আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে গণহত্যার মামলাও দায়ের করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। (Israel Hamas War)


পরিসংখ্যান বলছে, ৭ অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত গাজাতেই শুধুমাত্র ২৩ হাজার ৮৪৩ প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ওয়েস্টব্যাঙ্কে ৩৪৭ জন প্যালেস্তিনীয় মারা গিয়েছেন।গাজায়  নিহত প্যালেস্তিনীয়দের মধ্যে  ৯ হাজার ৬০০ শিশু এবং ৬ হাজার ৭৫০ জন মহিলা। গাজায় আহতের সংখ্যা ৬০ হাজারের বেশি, ওয়েস্টব্যাঙ্কে ৪ হাজার। প্রায় ১ হাজার শিশুর অঙ্গহানি হয়েছে, কারও দুই বা এক হাত, কারও দুই বা এক পা বাদ গিয়েছে। গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮২ জন সাংবাদিক। এখনও পর্যন্ত ১২০০ ইজরায়েলি নাগরিকের প্রাণ গিয়েছে। আহত ইজরায়েলি নাগরিকের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৩৬। (Israel Palestine Conflict)


ইজরায়েলি হানায় গাজায় ১০০-র বেশি ঐতিহাসিক সৌধ ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে ৩৪০ সালে নির্মিত সেন্ট হিলারিওন মনাস্ট্রি, ৪২৫ সালে নির্মিত দ্য চার্চ অফ সেন্ট পরফিরাস, ৪৪৪ সালে নির্মিত বাইজানট্নিন টার্চ অফ জাবালিয়া, ৮০০ খ্রিস্টপূর্বে নির্মিত  আন্থেদন হারবার, খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০-তে নির্মিত তেল এল-আজুল ফর্টিফায়েড সিটি, ইসলামিক যুগের আগে নির্মিত হাম্মাম-আল-সামারা।


আরও পড়ুন: North Korea Fires Missile: সাতসকালে ফের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা উত্তর কোরিয়ার, উদ্বিগ্ন দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান


এছাড়াও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, ১২২০ সালে নির্মিত ওটমান বিন কাশকর মসজিদ, ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত কাসর আল-বাশা প্রাসাদ, ১২৭৭ সালে নির্মিত লাইব্রেরি অফ গ্রেট ওমারি মসজিদ, ১৯৭৪ সালে নির্মিত হোলি ফ্যামিলি চার্চ, ১৯৮৮ সালে নির্মিত রশদ এল শাওয়া কালচারাল সেন্টার, ২০০৮ সালে নির্মিত মাতাফ-আল-ফুন্দুক মিউজিয়াম হোটেল, ২০১৬ সালে নির্মিত আল কারারা কালচারাল মিউজিয়াম।


১০০ দিন ব্যাপী এই যুদ্ধে গাজায় ২২ লক্ষ মানুষের জীবনে খাদ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ গাজাবাসী ২৪ ঘণ্টার বেশি অনাহারে কাটাচ্ছেন। এই ১০০ দিনে ঘরছাড়া হয়েছেন ১৯ লক্ষ মানুষ। অর্থাৎ প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৮ জন মাথার উপর ছাদ হারিয়েছেন। মাত্র ১৫টি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে, তবে তা নামমাত্রই। গাজার প্রায় ৫৬ শতাংশ বাড়িঘর মাটিতে মিশে গিয়েছে। ৬ লক্ষ ২৫ হাজার পড়ুয়ার স্কুল যাওয়া বন্ধ রয়েছে গত ১০০ দিন ধরে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণ এবং কর্ম সংস্থা (UNRWA) এই পরিসংখ্যান সামনে এনেছে।