ক্রমশ যুদ্ধের চেহারা নিচ্ছে ইরান-ইজরায়েল সংঘাত। পরমাণু কেন্দ্র থেকে তৈল শোধনাগার- ইরানের একের পর এক জায়গায় এয়ারস্ট্রাইক করে ইজরায়েল। পাল্টা ভয়ঙ্কর প্রত্যাঘাত হানে ইরান। ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে ইজরায়েলের মাটিতে। ইজরায়েলের গর্বের ‘আয়রন ডোম’ ভেদ করেই ঢুকে পড়ে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র। তেল আভিভ কেঁপে ওঠে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের শব্দে। অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, ইরানি হামলাতে ইজরায়েলের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। দুই দেশেই বইছে রক্তনদী।
এরই মধ্যে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইরানের ইসলামিক সরকারের প্রধান টার্গেট কিন্তু ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে। ফক্স নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ, নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ইরানের এক নম্বর শত্রু কিন্তু তিনি নন। ইসলামিক ওই দেশের এক নম্বর শত্রু হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ, ইরান পরমাণু শক্তিধর হয়ে উঠুক চান না ট্রাম্প।
নেতানিয়াহুর দাবি, ট্রাম্প একজন নির্ণায়ক রাষ্ট্রনেতা। অন্য নেতাদের মতো ট্রাম্প দুর্বলতা দেখিয়ে ইরানের সঙ্গে দর কষাকষির পথে যাননি। অন্যরা দুর্বলতা দেখিয়ে যা করেছে, তাতে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ারই সুযোগ করে দিয়েছে। আসলে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে গেলে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম দরকার পড়ে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ইরান ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। আরও কিছুটা বাড়াতে হবে ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা, তবেই তারা পরমাণু বোমা বানাতে পারবে। কিন্তু আমেরিকা , ইজরায়েল সেটাই আটকাতে চায়। নেতানিয়াহুর মতে এই আগে ইরানকে যে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তাতে তারা কোটি কোটি ডলারের সাহায্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছে। অর্থাৎ পারমাণবিক বোমা তৈরির পথে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে। নেতানিয়াহুর কথায়, ট্রাম্প এসব দরকষাকষির বিপক্ষে। এই সব চুক্তিপত্র কার্যত ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন তিনি। আর সেটাই রাগ ইরানের ।
ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে আটকাতে মরিয়া ইজরায়েলও । তাই নেতানিয়াহু এই ব্যাপারে নিজেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জুনিয়র পার্টনার বলে উল্লেখ করেছেন। নেতানিয়াহু ফক্স নিউজকে আরও বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ইজরায়েলের এই আক্রমণ ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কর্মসূচিকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে।
তিনি ইরানি কমান্ডার কাসেম সোলেমানিকেকে মেরেছেন। ট্রাম্প এখনকার মতো আগেও এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আমেরিকা চায় না ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করুক। তাই ট্রাম্প বুঝিয়ে দিয়েছে, তিনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির পরিপন্থী। ট্রাম্প বরাবর ওদের উপর চাপ সৃষ্ট করে গিয়েছেন। তাই তিনি ইরানের এক নম্বর শত্রু !