নয়াদিল্লি: ৪ বছর আগে তাঁর খাবারে মেশানো হয়েছিল। এমন বিস্ফোরক দাবি করলেন ইসরোর বিজ্ঞানী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র ছিলেন তপন মিশ্র। ইসরোর শীর্ষ স্থানীয় ওই বিজ্ঞানীর দাবি প্রায় ৪ বছর আগে বেঙ্গালুরুতে ইসরোর কার্যালয়ে তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হয়। খাবারে মেশানো হয়েছিল আর্সেনিক ট্রাইঅক্সাইড। এমনটাই অভিযোগ বিজ্ঞানীর।


নিজের ফেসবুক পোস্টে লং কেপ্ট সিক্রেট বলে একটি পোস্ট করেছেন তিনি। সেখানেই এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তপন মিশ্র। তিনি লিখেছেন, ২০১৭ সালের ২৩ মে খাবারে বিষ মেশেনো হয়েছিল। আর্সেনিক ট্রাইঅক্সাইড মেশানো হয়। ঘটনার দিন বেঙ্গালুরুতে সদর কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার চলছিল। দুপুরে খাবার খাওয়ার পর ধোসা এবং চাটনির খান তিনি। বিজ্ঞানীর অভিযোগ, ওই খাবারের মধ্যেই বিষ মেশানো হয়েছিল। তাঁর দাবি ওই বছর জুলাই মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক নিরাপত্তা আধিকারিক এই বিষয়ে তাঁকে জানান। আর্সেনিক জাতীয় বিষ দেহে প্রবেশ করায় তাঁকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন বলেও দাবি মিশ্রর।


তপন মিশ্রর বক্তব্য, রেডার ইমেজিং স্যাটেলাইট বা রিস্যাট গবেষণায় তাঁর অবদানের কারণে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের ছবি দিনের মতো রাতেও দেখা সম্ভব হয়েছে। আর এই প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে সেনা বা গুপ্তচর সংস্থা ছবি তুলতে পারে। শুধু দেশের মধ্যেই নয়, পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে যে কোনও সময়ে এই ছবি তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি মেঘলা আকাশেও ছবি তোলা যায়। আমেরিকা, রাশিয়া ও ইজরায়েলের বিভিন্ন সংস্থা ভারতকে ওই প্রযুক্তি দশ গুণ দামে বিক্রি করেছে। তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয় বলে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানী।


আগে ইসরোর আমদাবাদের স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের ডিরেক্টর পদে ছিলেন তপন মিশ্র। চলতি মাসের শেষে ইসরোর সিনিয়র অ্যাডভাইজারি হিসেবে অবসর নেবেন তিনি। তাঁর দাবি বিষ মেশানোর জেরে একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তপনের দাবি, বিষক্রিয়ার জেরে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়। শুধু তাই নয়, সোশাল মিডিয়ায় মেডিক্যাল রিপোর্টের ছবিও শেয়ার করেছেন তিনি। দিল্লির এইমসের রিপোর্ট। আর্সেনিক টক্সিকেশেন বলে উল্লেখ আছে ওই রিপোর্টে বলে দাবি বিজ্ঞানীর।


ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘’ ১৯৭১ সালে বিক্রম সারাভাইয়ের রহস্যমৃত্যুর কথা শুনেছি। ১৯৯৯ সালে বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের অধিকর্তা এস শ্রীনিবাসননের মৃত্যু নিয়েও অনেক সংশয় তৈরি। ১৯৯৪ সালে বিজ্ঞানী শ্রী নাম্বিনারায়ণনের মৃত্যুর ঘটনা সকলের জানা। কিন্তু এই অভিজ্ঞতা আমারও হবে ভাবিনি।


 কিন্তু কী উদ্দেশে মেশানো হয়েছিল বিষ? কী বলছেন ইসরোর বিজ্ঞানী? সংবাদ সংস্থাকে তপন মিশ্র বলেন, আমি গুপ্তচরের আক্রমণের আশঙ্কা করছি। বিভিন্ন উদ্দেশে এই আক্রমণ করা হতে পারে। যিনি সেনা এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাঁকে সরানোর জন্য এই কৌশল। আমি চাই গোটা ঘটনার তদন্ত করুক কেন্দ্রীয়। কেন এত বছর পর এই অভিযোগ করলেন বিজ্ঞানী? উঠছে সেই প্রশ্ন।