বিশাখাপত্তনম: আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজধানী হিসেবে সেই বিশাখাপত্তনমকেই বেছে নিলেন জগনমোহন রেড্ডি (Andhra New Capital) । বিশাখাপত্তনমই রাজ্যের প্রধান রাজধানী হিসেবে গন্য হবে বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। একই সঙ্গে রাজধানী হিসেবে গন্য হবে অমরাবতী এবং কার্নুলও। অর্থাৎ অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhra Pradesh) রাজধানী হিসেবে গন্য হবে তিন শহর। আদালত যদিও গতবছরই এর বিরুদ্ধে রায় শুনিয়েছিল। এক রাজ্যের তিন রাজধানী সংক্রান্ত আইন তৈরি সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছিল হাই কোর্ট। সেই মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে ঝুলছে। তার মধ্যেই বিশাখাপত্তনমকে রাজ্যের রাজধানী ঘোষণা করল জগন সরকার। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই প্রশাসনিক দফতর সেখানে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়ে দিলেন জগন (Visakhapatnam)।

  


বিশাখাপত্তনমকে রাজ্যের রাজধানী ঘোষণা করল জগন সরকার


মঙ্গলবার বিশাখাপত্তনমকে রাজ্যের নয়া রাজধানী ঘোষণা করেছেন জগন। শীঘ্রই সেখানে বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন হতে চলেছে। তাই বিশাখাপত্তনমকে রাজধানী করা কেন প্রয়োজন, তাও ব্যাখ্যা করেন জগন। তাঁর যুক্তি, উপকুলবর্তী বিশাখাপত্তনম বরাবর অন্ধ্রের অর্থনীতিকে মজবুত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আগেও বিশাখাপত্তনম থেকে কাজকর্ম সামলেছেন তিনি। এ দিন জগন বলেন, “আজ আপনাদের বিশাখাপত্তনমে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছি, যা কিনা আগামী দিনে আমাদের রাজধানী হতে চলেছে।” ঠিক কবে তিনি বিশাখাপত্তনমে সরে যাচ্ছেন, তা যদিও নির্দিষ্ট করে জানাননি জগন। তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রাজধানীতে স্থানান্তরণ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন।


আরও পড়ুন: Economic Survey 2023: আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে কমল বৃদ্ধির হার, ২০২৪-এ সর্বোচ্চ জিডিপি হতে পারে ৬.৮ শতাংশ


২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশকে ভেঙে দু’টুকরো করা হয়। নয়া রাজ্য তেলঙ্গানার উদ্ভব ঘটে। সেই সময় অবিভক্ত অন্ধ্রের রাজধানী হায়দরাবাদ তেলঙ্গানার দখলে চলে যায়। ২০১৫ সালে অন্ধ্রের তৎকালীন এন চন্দ্রবাবু নায়ডু, কৃষ্ণা নদীর তীরে অবস্থিত বিজয়ওয়াডা়-গুন্টু এলাকার অন্তর্গত অমরাবতীকে রাজধানী ঘোষণা করেন। এর পর, ২০২০ সালে তিনটি শহরকে রাজধানী রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, অমরাবতী, বিশাখাপত্তনম এবং কার্নুল। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে অনমরাবতীকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজধানী রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


২০২০ সালে তিনটি শহরকে রাজধানী রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, অমরাবতী, বিশাখাপত্তনম এবং কার্নুল


অমরাবতীকে ঘিরেও কম বিতর্ক হয়নি। বড় ধরনের দুর্নীতির ভরকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয় অমরাবতী। অভিযোগ ওঠে, রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হওয়ার আগে, গোপনে কিছু প্রভাবশালীকে সেই তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে আগেভাগে সেখানে বিপুল পরিমাণ জমি কিনে রেখেছিলেন প্রভাবশালীরা। পরবর্তী কালে কেন্দ্রীয় তদন্তে জানা যায়, ২০১৪ সালেই শুধুমাত্র ৪ হাজার একরের বেশি জমি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল অমরাবতীর। কিন্তু তাতে কোনও রকম ভূমিকা পালনের কথা অস্বীকার করেন চন্দ্রবাবু। বরং কৃষকদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে জমি হাতিয়ে, সেগুলির উপর কেন বহুতল নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়ে জগন সরকারকেই কাঠগড়ায় তোলেন তিনি।  পরে সেই সংক্রান্ত ইজারার নথিতেই গলদ পাওয়া যায়।