জয়পুর: ২৫ বছর ধরে সোনারুপো বিক্রি করেছেন। হুকুমচাঁদ সোনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি, পেট চালানোর জন্য একদিন তাঁকে এতদিনের কারবার ছেড়ে শাকসবজি বিক্রি করতে হবে। কিন্তু যা কল্পনার অতীত ছিল, তাই সত্যি করে তুলেছে এই লকডাউন।


জয়পুরের রামনগরে তাঁর দোকান জিপি জুয়েলারি শপ আগেও গয়নায় ভরা থাকত।   সেখানে এখন রয়েছে আলু পটল, বাঁধাকপি। গয়না ওজনের দণ্ডে এখন তিনি আলু পেঁয়াজ মেপে দেন। আগের সেই শৌখিন খদ্দেররা কোথায় যেন ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছেন, বদলে দেখা দিয়েছেন বাজারের ব্যাগ হাতে ব্য়স্তসমস্ত ক্রেতার দল। হুকুমচাঁদ বলেছেন, দিনকয়েক হল দোকানে তরিতরকারি বিক্রি করা শুরু করেছেন তিনি। বিশেষ কিছু সঞ্চয় ছিল না, মূলধনও এমন কিছু নয়। এখন গয়না বিক্রি সম্ভব নয়, ফলে পেট চালাতে সবজি বিক্রি করা ছাড়া এই মুহূর্তে আর উপায় কী!

হুকুমচাঁদ বলেছেন, এতদিন ধরে ঘরে বসে রয়েছি, কে আমাদের খাবারদাবার, টাকাপয়সা দেবে?  আংটি, কানের দুলের মত ছোটখাটো গয়না বিক্রি করতাম, সঙ্গে সারাতাম ভেঙে যাওয়া গয়না। তাতে এতদিন সংসার চলে যেত কিন্তু এখন তো আর চলছে না। শুধু আমি তো নই, অন্য দোকানিরাও নিশ্চয়ই এমন সমস্যায় পড়েছেন।

পরিবারে তিনিই একমাত্র রোজগেরে। হুকুমচাঁদ জানিয়েছেন, এতদিনের ব্যবসা বন্ধ রেখে এভাবে তরকারি বেচার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু যাই হোক, এখন তো তিনি উপার্জন করছেন, বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকার থেকে শত গুণে ভাল। দোকানের ভাড়া দিতে হয়, মায়ের দেখাশোনা করতে হয়। ছোট ভাই মারা গিয়েছেন, তাঁর পরিবারকেও সাহায্য করতে হয় তাঁকে।

কৃষকদের বাজার থেকে প্রতিদিন সবজি কিনে আনেন হুকুমচাঁদ, তারপর টেম্পো ভাড়া করে নিয়ে আসেন দোকানে। তিনি জানেন কাজই ঈশ্বরের উপাসনা। ব্যস, এটুকুই যথেষ্ট।