নয়াদিল্লি: সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে, সেই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, স্বামী ও স্ত্রীর কাশ্মীর ভ্রমণের দৃশ্য। ভূস্বর্গে শিকারা ভ্রমণ করছেন তাঁরা। হাসি-খুশি মুখ। সোনালি রোদের আদর। শিকারার ছাদে হ্রদের টলমলে জলের প্রতিফলন। সেই ভাললাগা জানান দিচ্ছে । আর আছে দূরে নীলচে আকাশ। ভিডিওতে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন কর্ণাটকের ওই দম্পতি। অথচ এই ভিডিও শ্যুটের সময় তাঁরা জানতেনও না যে, আর বাড়ি ফেরা হবে না ! পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হানায় মৃত্যু হয়েছে কর্ণাটকের ওই বাসিন্দার।
জঙ্গির গুলিতে মৃত্যু হয়েছে মঞ্জুনাথ রাওয়ের। তবে বেঁচে গিয়েছেন স্ত্রী পল্লভী এবং তাঁদের বছর ১৮ -র পুত্র সন্তান।স্ত্রী পল্লভী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নৃশংস এই ঘটনার পরেরটা আরও নির্মম। 'স্বামীকে মেরে ফেলেছেন, আমাদেরও মেরে ফেলুন', জঙ্গিদের কাছে বলেছিলেন পল্লভী। যদিও সেই আবেদন মেনে নেওয়া হয়নি। 'মোদিকে গিয়ে জানা', পাল্টা বলে জঙ্গি ! যার কারণটা ভয়াবহ। জঙ্গিদের মধ্যে একজন তাঁদের জানায় যে, তাঁরা পল্লভীদের প্রাণে মারবে না। কারণ জীবিত অবস্থায় তাঁরা, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে গিয়ে বলুক, এই জঙ্গি হামলার কথা !
সূত্র মারফৎ খবর, কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় ২৭জনের বেশি মৃত্যুর আশঙ্কা করা হয়েছে। পহেলগাঁওয়ের রিসর্টে হামলা ৪০ রাউন্ডের বেশি গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।ধর্মীয় পরিচয় দেখে দেখে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ইতিমধ্যেই কাশ্মীরে গিয়েছে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
রক্তে লাল হল ভূস্বর্গ!এবার জঙ্গিদের নিশানায় পর্যটকরা। ফের কাশ্মীর ঘিরে উদ্বেগ-আতঙ্ক-ভয়-চিন্তা। মাস তিনেক বাদেই জুলাইয়ের ৩ তারিখ অমরনাথ যাত্রা শুরু হওয়ার কথা। তার আগেই অত্য়ন্ত ইঙ্গিতপূর্ণভাবে পহেলগাঁওতে পর্যটকদের নিশানা করল জঙ্গিরা। জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মাটিতে পড়ে থাকা পর্যটকের দেহের এই ছবি শিরদাঁড়া দিয়ে হিমেল স্রোত বইয়ে দেবে। একাধিক মৃত্য়ু! জখম হলেন আরও অনেকে! ঘটনাস্থল, ট্য়ুরিস্টস্পট পহেলগাঁও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ পহেলগাঁও হিল স্টেশন থেকে প্রায় ৫ কিমি দূরে বৈসরন উপত্যকায়,হামলা চালায় জঙ্গিরা। রিসর্টে ঢুকেও গুলি চালায় তারা। এভাবেই লনে পড়ে থাকতে দেখা যায় পর্যটকের রক্তাক্ত দেহ। জখম পর্যটকদের মধ্যে অধিকাংশ গুজরাতের বাসিন্দা।তাছাড়াও মহারাষ্ট্র,ওড়িশা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ুর পর্যটকরাও রয়েছেন। হামলার দায় স্বীকার করেছে পাক ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সহযোগি সংগঠন TRF। অভিযোগ, পর্যটকদের নাম-পরিচয় জানতে চাওয়ার পর তাদের নিশানা করা হয়।