ধানবাদ: এক বোতল-দু'বোতল হলে তাও কথা থাকত। কিন্তু তাই বলে ৮০০ বোতল বিদেশি মদ ইঁদুরের পেটে? ব্যবসায়ীর দাবি শুনে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হল। কারণ দুর্নীতির বাজারে ইঁদুরের ভাবমূর্তি নিয়েও এখন টানাপোড়েন। কারণ মদের স্টকের হিসেব দিতে না পেরে ইঁদুরের ঘাড়েই দোষ চাপালেন ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, ৮০০ বোতল বিদেশি মদ ইঁদুর গিলে ফেলেছে। (Jharkhand News)

ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নয়া আবগারি নীতি চালু হচ্ছে সেখানে। তার আগে প্রশাসনের তরফে মদের স্টক মিলিয়ে দেখা হচ্ছিল। সেই মতো ধানবাদের বালিয়াপুর এবং প্রধানখন্তা এলাকার বিভিন্ন মদের দোকানে হানা দেওয়া হয়। আর সেখানেই সবমিলিয়ে দেশে তৈরি ৮০২টি বিদেশি মদের বোতল নিয়ে গরমিল চোখে পড়ে। (Dhanbad News)

কিছু বোতল একেবারে খালি, শুকনো, তলানিতে দু’ফোঁটা পড়েছিল কিছু বোতলে। সেই নিয়ে দোকানের মালিককে চেপে ধরেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। কিন্তু তাতে ইঁদুরের ঘাড়ে দোষ চাপান ওই ব্যবসায়ী। জানান, ইঁদুরই ৮০২ বোতল মদ গিলে নিয়েছে। ব্যবসায়ীর এমন দাবি শুনে হতবাক হয়ে যান সকলে। তবে বিষয়টি হজম হয়নি কারও।

ফলে ওই ব্যবসায়ীকে নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে ক্ষতিপূরণ মেটাতে বলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।  অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সাইজ কমিশনার রামলীলা রাবানি জানান, ব্যবসায়ীকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু ব্যবসায়ী যে ইঁদুরে মদ সাফ করে দিয়েছে বলে জানালেন? ওই আধিকারিকের বক্তব্য, ‘যত্তসব ননসেন্স’।

তবে দুর্নীতি ঢাকতে ইঁদুরের ঘাড়ে এই প্রথম দোষ চাপানো হল না। সাধারণ ব্যবসায়ী নন, এর আগে ধানবাদেই পুলিশি হেফাজত থেকে গায়েব হয়ে যাওয়া কেজি কেজি গাঁজা খেয়ে নেওয়ার দোষও চাপে ইঁদুরের ঘাড়ে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত পৌঁছয়। ঝাড়খণ্ড সরকার যে নয়া আবগারি নীতি আনছে, তাতে স্বচ্ছতার পাশাপাশি রাজস্ব বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

বছর তিনেক আগে উত্তরপ্রদেশ থেকেও একই ঘটনা সামনে আসে। বেআইনি কারবারিদের হাত থেকে মথুরার পুলিশ ৫৪১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। সেই বিপুল পরিমাণ গাঁজা গুদামে মজুত রাখা হয়েছিল। কিন্তু আদালত যখন সেই মজুত রাখা গাঁজার কথা জানতে চায়, পুলিশ জানায়, বাজরার বস্তায় গাঁজা ভরে মজুত করে রাখা হয়েছিল শেরগড় এবং হাইওয়ে থানার গুদামে। কিন্তু কিছুই বেঁচে নেই। সব ইঁদুরের পেটে চলে গিয়েছে। পুলিশের সেই যুক্তি শুনে হতবাক হয়ে যান সকলেই। ইঁদুর গাঁজা খেয়ে সাবাড় করে দিয়েছে, তার প্রমাণ জমা দিতে বলা হয় পুলিশকে। তার পর কী হয়েছিল, তা যদিও সামনে আসেনি।