নিউ ইয়র্ক : তাপপ্রবাহের (Heatwave) জেরে কিছুদিন আগেই পুড়ছিল পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য। আর এই মুহূর্তে কার্যত গোটা ইউরোপ পুড়ছে। তাপপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক জায়গাতেই। এর মাঝেই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত কয়েকশো বছরেই শুধু নয়, গত কয়েক  হাজার বছরের মধ্যে উষ্ণতম হতে চলেছে চলতি জুলাই মাস (Worlds Hottest July Month) ! এমনই তথ্য সামনে এসেছে নাসা।


নাসার গোরার্ড ইনস্টিটিউটের স্পেস স্টাটিজের ডিরেক্টর গাভিন স্মিথ জানিয়েছেন যে তথ্য। ওয়াশিংটনে এক আলোচনাসভার মাঝে যে তথ্য সামনে রাখেন তিনি। গাভিন জানািয়েছেন, গোটা বিশ্বজুড়ে এক অদ্ভূত পার্থক্য লক্ষ্য করছি আমরা। যে পরিবর্তনগুলো রীতিমতো চমকে দেওয়া র মতোই। গত চার দশকে ক্রমশ বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা। এই অবস্থায় চলতি জুলাই মাস হতে চলেছে উষ্ণতম। কয়েক হাজার বছরের মধ্যে যা সবথেকে বেশি হতে চলেছে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।


কিছুদিন আগেই তাপমাত্রার প্রবল বৃদ্ধিকে 'মানবসভ্যতার জন্য মৃত্যুঘণ্টা' বলেই ঘটনাক্রমকে অভিহিত করছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের আশঙ্কা, এমন একটা দিনের সাক্ষী হওয়া যথেষ্ট আশঙ্কার। এল নিনোর (El Nino) যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন তাঁরা। বার্কলে আর্থে গবেষণারত বিজ্ঞানী জেকে হাউসফাদারের আশঙ্কা, 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে এরকম চিন্তার দিন আরও বাড়বে। আরও চিন্তার রেকর্ড তৈরি হবে। গোটা বিশ্বে যেভাবে কার্বন ডাই অক্সাইড ও গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ বেড়েছে, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে এল নিনোর প্রবণতা, সবমিলিয়ে উত্তরোত্তর তাপমাত্রা বৃদ্ধিরই আশঙ্কা।'


পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষ থেকে শুরু করে এশিয়া, আমেরিকা বা ইউরোপ মহাদেশ প্রবল তাপপ্রবাহের জের ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আবহবিদরাও কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন, এরকম টানা তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঘটনাক্রম আগে তাঁরা গাঙ্গেয় বঙ্গে দেখেননি। ক্যালেন্ডারের খাতায় বর্ষা হলেও পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ জায়গাতেই এখনও তাপের যথেষ্ট দাপট জারি রয়েছে। আর তাপের জের শুধু জীবনযাত্রাতেই নয়, পড়তে শুরু করেছে পকেটেও। প্রথমে তাপপ্রবাহ ও পরে মাঝে কয়েকদিনের অতিবৃষ্টিতে কার্যত আকাশ ছুঁয়েছে সবজির দাম। নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধির মাঝেই যা কার্যত চিন্তা বাড়াচ্ছে ক্রমশ।


এদিকে, আগামী বেশ কয়েকবছর ভারত-পাকিস্তান সহ এশিয়ার একাধিক দেশে তাপপ্রবাহের রেশ বাড়বে বলেই কিছুদিন আগে একাধিক বিজ্ঞানী আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। আর তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে আগামী কয়েকবছরের মধ্যে এসি-র ব্যবহার আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা তাদের। আর যার জেরে আখেরে পরিবেশে আরও বেশি গরম বাড়ার আশঙ্কা। গাছ লাগিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমানো, গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়া পৃথিবী ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য থাকার বেশ কষ্টকর এক জায়গা হয়ে উঠবে বলেই আশঙ্কা সবমহলেই।


আরও পড়ুন- এক নয়, দুই নয়, তিন তিনটি ভূমিকম্প ! আধ ঘণ্টার মধ্যে বারবার কেঁপে উঠল জয়পুর


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন         https://t.me/abpanandaofficial