কলকাতা: গত বছর ডিসেম্বরেই মধ্যপ্রদেশে (Madhyapradesh) বিজেপির কাছে পর্যুদস্ত হয়েছিল হাত শিবির। আর এবার লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আগে বড়সড় ধাক্কা কি লেগেছে হাত শিবিরে? মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের প্রবাদপ্রতিম নেতা হিসেবে যার পরিচয় সেই কমলনাথের (Kamal Nath) সঙ্গে দলের দূরত্ব কি প্রকট হচ্ছে? শনিবার কমলনাথ দিল্লি যেতেই কার্যত দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল এই জল্পনা। গুজব শুরু হয়েছিল যে তিনি বিজেপিতে যেতে পারে। পদ্ম শিবিরের তরফে থেকেও আপত্তির কথা বলা হয়নি, বরং দরজা খোলা রাখার ইঙ্গিতই দেওয়া হয়েছিল। যদিও কমলনাথ এই বিষয়ে নিজে থেকে কিছুই বলেননি। বরং প্রশ্ন করলে বলেন, 'এত উত্তেজনার কী আছে? এখানে অস্বীকারের কিছু নেই। কিছু ঘটলে অবশ্যই আপনাদের জানাব।' (Kamalnath on joining BJP)


রবিবার তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কংগ্রেসের (Congress on Kamalnath)। এরই মধ্যে কংগ্রেসের বেশ কিছু নেতা দাবি করলেন, কমলনাথের বিজেপিতে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কমলনাথের সঙ্গে মিটিংয়ের পর কংগ্রেস নেতা সজ্জন সিংহ ভার্মা এএনআই-কে জানিয়েছেন, 'আমি ওঁর সঙ্গে আলোচনা করেছি। উনি বলেছেন এখন ওঁর লক্ষ্য মধ্যপ্রদেশের ২৯টি লোকসভা আসনে কীভাবে জাতিগত সমীকরণ কাজ করবে। তিনি বলেছেন এখন এসব কিছু (দল ছাড়ার ব্য়াপারে) ভাবছেন না।'


 






একই সুর শোনা গিয়েছে কংগ্রেস নেতা রাজীব শুক্লার গলাতেও। এএনআই-কে তিনি জানিয়েছেন, 'আমি তো শুনেছি যে এরকম কিছু নয় বিষয়টা।' তাহলে কি ওঁর ছেলে বিজেপিতে যাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে রাজীব শুক্লা বলেন, 'জানি না।'


 






লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস শিবিরে ফিরে এসেছে জ্য়োতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার স্মৃতি। মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ ও জ্যোতিরাদিত্য শিবিরের টানাপড়েন কারও অজানা ছিল না। শেষ পর্যন্ত অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।


এবার কমলনাথ আর তাঁর ছেলে নকুলনাথও কি পদ্মমুখী? এমন জল্পনা তৈরির বেশ কিছু কারণও রয়েছে। নকুলনাথ ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে কংগ্রেসের নাম মুছেছেন। তাছাড়া, আসন নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। কমলনাথের আসন ছিন্দওয়াড়া - যেখান থেকে তিনি টানা জিতে সাংসদ হয়েছেন, সেই আসনেই নিজে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন তাঁর ছেলে নকুলনাথ। সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল। 


রবিবার সজ্জন ভার্মা দাবি করলেন যে দল ছাড়ার কথা ভাবছেন না কমলনাথ। তার আগেই কমলনাথের অত্য়ন্ত ঘনিষ্ট বলে পরিচিত মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী দীপক সাক্সেনা এই সমস্যার জন্য কংগ্রেসের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁর দাবি, মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হারের কারণ হিসেবে কংগ্রেসের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন কমলনাথকে। এই কারণেও ক্ষুব্ধ হয়েছেন কমলনাথ। দীপক সাক্সেনার দাবি, ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচন থেকেই কমলনাথকে অবহেলা করা হয়েছে। তাঁর ক্ষোভ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানেও হেরেছে কংগ্রেস- কিন্তু দোষ দেওয়ার বেলায় কেন একা কমলনাথ?     


বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, রাজ্যসভায় আসন পাওয়া নিয়েও কংগ্রেসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতান্তর হয়েছে কমলনাথের (Kamalnath in Rajya Sabha)।  সেই কারণেই এই দূরত্ব? তাহলে কি রবিবারের আলোচনার পর মেঘ কেটেছে? নাকি এখনও রয়েছে দোলাচল?  


আরও পড়ুন: বাড়ির দাওয়ায় ব্ল্যাক প্যান্থার! উঁকিঝুঁকি ঘরের ভিতর, তারপরে?