নয়া দিল্লি: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে চোপড়ায় সালিশি সভায় যুগলকে মারধরের ঘটনায় তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। চোপড়ায় সালিশি সভায় তরুণ-তরুণীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের দাবি, 'চোপড়ার নিগৃহীতা অসামাজিক কাজ করছিলেন। সেই জন্যই গ্রামে সালিশি সভা বসে। এই ঘটনায় কিছু ভুল থাকলেও গ্রামে এরকম সালিশি সভা হয়। ' 


একে এমন মধ্যযুগীয় বর্বরতা, তার উপর বিধায়কের এমন মন্তব্য - সবমিলিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। সোশ্যাল মিডিয়ায়, একের পর এক পোস্ট করছেন বিজেপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা। এরই মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও এ রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে কার্যত ধুয়ে দিয়েন বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। তাঁর দাবি, চোপড়ায় ওই মহিলার উপর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এনে 'শরিয়তি আইন প্রয়োগ' হয়েছে। 

কঙ্গনা এদিন বলেন, 'এ নিয়ে দেশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে । একজন মহিলার বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ আনা হল আর সেখানে শরিয়তি আইন (Sharia Law was implemented) প্রয়োগ করে দেওয়া হল। আমি তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ INDI জোটের অংশীদারদের প্রশ্ন করতে চাই, যাঁরা প্রতিদিন সংবিধান হাতে নিয়ে প্রতিবাদ করে চলেছে ,প্রতিদিনের নাটক করে চলেছে ... এটা কি সংবিধানে লেখা আছে যে আপনি যেকোনো রাজ্যে শরিয়তি আইন নির্বিচারে প্রয়োগ করতে পারেন?...রাহুল গাঁধীর এর উত্তর দেওয়া উচিত কারণ TMC INDI জোটের একটি অংশ...' 


অন্যদিকে, বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ' মধ্য়যুগীয় আচরণ। তার থেকেও যেটা অ্য়ালার্মিং, বিধায়ক তার প্রত্য়ুত্তরে বলছে, অর্থাৎ বিধায়ককে যখন সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছেন, তার উত্তরে বিধায়ক বলছে, মুসলিম রাষ্ট্রে এই ধরনের আইনের শাসনব্য়বস্থা থাকে। এখানে একটু শাসনটা বেশি হয়ে গেছে। তার মানে, তিনি ভাবছেন, তাঁর বিধানসভা একটি মুসলিম রাষ্ট্র। এই ধরনের মানসিকতার লোকেরা তৃণমূল কংগ্রেসে বসে আছেন। ' 


এর জবাব দিতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম টেনে এনেছেন মণিপুর হাথরাস প্রসঙ্গ। ' মণিপুরে নিরাপদ? হাথরসে নিরাপদ? গুজরাতে নিরাপদ? জেপি নাড্ডাকে বলো, আপনি আচারি ধর্ম, পরেরে শিখাও। সবথেকে বেশি মহিলাদের যদি কোথাও নির্যাতন হয়, সেটা বিজেপির রাজ্যে' 


অন্যদিকে আবার সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ডিম্পল যাদব বলেন, 'কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ করা উচিত। মণিপুরেরও যে ঘটনা, আমরা দেখেছি, যেভাবে ভারতের এক মেয়ের কী হাল হয়েছে, তারও কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ সরকারের করা উচিত।'