কার্গিল : ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল ২০ বছর। ওই অল্প বয়সেই স্বামীকে হারান বিনোদ কানওয়ার। কিন্তু, সেই যন্ত্রণা সত্ত্বেও নিজের একমাত্র সন্তানকে ভারতীয় সেনায় পাঠাতে এতটুকু দ্বিধা দেখালেন না বিনোদ। Kargil Vijay Diwas

২৬ তম কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে শহিদদের পরিবারকে সংবর্ধনা জানানো হয়। সেখানেই বছর ৪৬-এর বিনোদ কানওয়ার সংবাদ সংস্থা PTI-কে বলেন, "আমাদের প্রথমে দেশের কথা ভাবতে হবে এবং দেশকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। আমরা স্বার্থপর হতে পারি না।" ১৯৯৯ সালের ১০ জুলাই। ভারতীয় সেনার পয়েন্ট ৪৭০০ সফলভাবে পুনর্দখলের সময় শহিদ হন নায়েক ভানওয়ার সিং রাঠৌর। সেই সময় এক বছর বয়সও পূর্ণ হয়নি তেজবীর সিং রাঠৌরের। এই তেজবীরই এখন দেরাদুনে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে বিনোদ কানওয়ার বলেন, "আমার ছেলে তেজবীর সিং রাঠৌরের তখন সবে ৬ মাস বয়স, যখন তার বাবা শহিদ হন। ও ওর বাবাকে দেখেওনি।" 

কখনও কি ছেলেকে সেনায় পাঠাতে দ্বিধা হয়েছে ? এ প্রসঙ্গে বিনোদ কানওয়ারের পরিষ্কার জানান, তাঁর মাথায় কখনও দ্বিতীয় চিন্তা আসেনি। তিনি বলেন, "আমার পরিবার থেকে সেনাতে যোগদানকারী তৃতীয় প্রজন্ম হবে তেজবীর। আমার বাবা জওয়ান ছিলেন। আমার স্বামী দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন এবং আমার ছেলেও দেশের সেবা করবে।" তবে, স্বামীর মৃত্যু পরিবারের পক্ষে খুবই যন্ত্রণাদায়ক জানিয়ে বিনোদ বলেন, "দেশের জন্য তাঁর আত্মত্যাগ নিয়ে আমরা গর্বিত।"

১৯৭৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের নাগৌড় জেলার হিরাসানি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন নায়ের ভানওয়ার সিং রাঠৌর। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি সেনায় যোগ দেন। প্যারাশ্যুট রেজিমেন্টের ৭ নম্বর প্যারা ব্যাটেলিয়নের অংশ ছিলেন তিনি। সাহসী প্যারাকমোন্ডোদের নিয়ে গঠিত এই রেজিমেন্ট। 

প্রতি বছর ২৬ জুলাই কার্গিল বিজয় দিবস পালিত হয়। ১৯৯৯ সালের এই দিনে, ভারতীয় সেনাবাহিনী 'অপারেশন বিজয়'-এর সফল সমাপ্তি ঘোষণা করে। কার্গিলের বরফাবৃত উচ্চতায় প্রায় তিন মাস ধরে যুদ্ধের পর বিজয় ঘোষণা করে, যার মধ্যে টোলোলিং এবং টাইগার হিলের মতো অতি-উচ্চ স্থানগুলিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে হটিয়ে কার্গিল চূড়ায় তেরঙ্গা উড়িয়েছিল ভারতীয় সামরিক বাহিনী। কিন্তু তার আগে বহু প্রাণের বলি দিতে হয়েছিল এ দেশকে। তাঁদের শ্রদ্ধা জানানো হয় এই কার্গিল বিজয় দিবসে।