আবির দত্ত, কলকাতা : টার্গেট করেই কি কসবার আইন কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল? পরিকল্পনামাফিকই বুধবার তাঁকে বারবার কলেজে আটকে দেওয়া হয়েছিল?  সূত্রের দাবি, বুধবার সন্ধে থেকে রাত অবধি ঘটনাক্রম পর্যালোচনা করে এমনই অনুমান করছেন তদন্তকারীরা।

অভিযোগকারিণী FIR-এ অভিযোগ করেছেন, তিনি সেদিন বারবার বেরোতে চাইলেও, তাঁকে আটকে দেওয়া হয়।FIR-এ তিনি লিখেছেন, সন্ধে ৬.১০ নাগাদ আমি এবং কয়েকজন পড়ুয়া বেরোতে যাই। কিন্তু, 'J' আমাদের আটকায় এবং আরও কিছুক্ষণ থাকতে বলে। আমরা থেকে যাই।  এরপর FIR-এ আরেক জায়গায় অভিযোগকারিণী লিখেছেন, সাড়ে ৭টা নাগাদ GS (সাধারণ সম্পাদক) এই বলে বেরিয়ে যান, যে তিনি শিগগিরই কিছু কাজ সেরে ফিরে আসবেন। তখনই আমিও জিনিসপত্র গুছিয়ে বেরোতে যাই। তখন 'J' আমাকে আটকায় এবং 'P' ও 'M'-কে চোখের ইশারায় বাইরে যেতে বলে। তারা বেরিয়ে যায় এবং 'J'-র কথা মতো বাইরে থেকে দরজা আটকে দেয়। এখানেই প্রশ্ন উঠছে,  তাহলে অভিযোগকারিণীকে কি আগে থেকেই টার্গেট করেছিল অভিযুক্তরা? পরিকল্পনামাফিকই তাঁকে বারবার আটকে দেওয়া হয়?  অভিযোগকারিণীর দাবি, প্য়ানিক অ্য়াটাক হওয়ার পর ইনহেলার নিয়ে কিছুটা সুস্থ বোধ করলে, তিনি ফের বেরনোর চেষ্টা করেন। FIR-এ তিনি লিখেছেন, আমি জিনিসপত্র গুছিয়ে বাইরে বেরোই পালানোর জন্য়। তখন দেখি ওরা মেন গেট আটকে রেখেছে। এরপরই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।

CCTV ফুটেজ, মেডিক্যাল রিপোর্ট, কলেজের সামনের দোকানে ইনহেলার কেনা, হকিস্টিক উদ্ধার ও মনোজিতের মোবাইল থেকে উদ্ধার হওয়া ভিডিও। সূত্রের খবর, কসবাকাণ্ডে নির্যাতিতা FIR-এ ঘটনার দিনের যে পুঙ্খানুুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ হুবহু মিলে যাচ্ছে। সূত্রের খবর, নির্যাতিতার প্রতিরোধের ক্ষতচিহ্ন মিলেছে ধৃত মনোজিতের দেহেও । 

অন্যদিকে আইন কলেজের ধৃত নিরাপত্তারক্ষী বলেছেন, ঘটনার দিন সন্ধে পর্যন্ত কলেজেই ছিলেন প্রথম সিমেস্টারের আরও এক ছাত্রী। সেই ছাত্রীকে সন্ধের দিকে বেরিয়ে যেতে দেখেন ডে শিফটের গার্ড। রাত ৮টা ২৫-এ ওই নিরাপত্তারক্ষীও কলেজ থেকে বেরিয়ে যান। ঘটনার দিন ডে শিফটের গার্ড মনোজিৎকে ইউনিয়ন রুমে দেখেছিলেন। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, ওই দিন মনোজিৎ, প্রমিতরা কলেজেই ছিল। সন্ধে বেলা ইউনিয়ন রুমের দরজা ফাঁক করে মনোজিৎ, প্রমিত আছে কি না জানতে চেয়ে, তাঁকে ভিতরে পাঠিয়ে দিতে বলেন। নির্যাতিতার বয়ানের সঙ্গে ডে শিফটের গার্ডের বয়ান মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।