গোটা দেশ যখন স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে মেতে, তখন কাশ্মীরের কিশতওয়ারে নেমেছিল শোকের ছায়া! উত্তরকাশীর পর কাশ্মীরের এই জেলাও ভেসে গিয়েছিল প্রকৃতির তাণ্ডবে । আবার প্রকৃতির আঘাত নেমে এল উপত্যকার দোদা জেলায়। সত্যিই আবার ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর!  প্রথমে তীব্র একটা  শব্দ। তারপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে এল জল-কাদা আর বড় বড় পাথরের স্রোত। তীব্র তার গতি। অদম্য তার শক্তি। তাসের ঘরের মতো দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে গেল বাড়ির পর বাড়ি। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে ধেয়ে আসা হড়পা বানে ভেসে গেল জম্মু-কাশ্মীরের গোটা একটা গ্রাম। 

মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের দোদা জেলায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। কাঠুয়া এবং কিস্তোয়ারেও একই রকম পরিস্থিতি।  দুর্যোগের পর হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়।  ১০ টিরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জম্মুর কাঠুয়া, সাম্বা, দোদা, জম্মু, রামবান এবং কিশতোয়ার জেলা সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি  করা হয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে জম্মুর সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল।  শ্রীনগর জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।  গত ২৪ ঘন্টায় কাঠুয়া জেলায় ১৫৫.৬ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে । কাশ্মীরে, দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলিতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। উঁচু এলাকাতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঝিলাম নদীতে কোনও বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়নি, তবে জলস্তর বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মধ্য কাশ্মীরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।    

মেঘভাঙা বৃষ্টি আসলে হঠাৎ করে অতিভারী বৃষ্টি। নির্দিষ্ট এবং সীমিত এলাকা জুড়ে হয় এই বৃষ্টি। সংজ্ঞা অনুযায়ী, ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এক ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টিপাত হলে, তাকে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলে। জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতওয়ারেও কিছুদিন আগে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাতে মারা যান  কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফের ২ জওয়ানও। দুই শতাধিক মানুষ নিখোঁজ হয়ে যান। এই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৩ সালের ১৬ জুন কেদারনাথে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে। মৃত্যু হয় অন্তত চার হাজার মানুষের।