নয়াদিল্লি: আকাশ থেকে সটান মাটিতে আছড়ে পরে বিমান। ভাগ্যক্রমে কিছু যাত্রী যদিও বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু বড়দিনে বিমান ভেঙে পড়ে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে কাজাখস্তানে, তার রেশ কাটছে না এখনও। ঘনকুয়াশা থেকে পাখির ঝাঁকের হামলা, দুর্ঘটনার একাধিক তত্ত্ব উঠে এসেছে এখনও পর্যন্ত। আর সেই আবহেই নয়া তথ্য সামনে এল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে পড়ে বিমানটি ভেঙে পড়ে থাকতে পারে বলেও দাবি উঠছে। (Kazakhstan Plane Crash)
বুধবার, বড়দিনের সকালে রাশিয়া অভিমুখী আজেরবাইজান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান যাত্রীসমেত ভেঙে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে আসে, তাতে দেখা যায়, আকাশ থেকে আচমকা মাটিতে নেমে আসে বিমানটি। যেই না মাটি ছোঁয়া, সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বিস্ফোরণ। আগুনের লেলিহান শিখা, কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক। পাঁচ বিমাকর্মী-সহ বিমানে ৬৭ জন যাত্রী ছিলেন, যাঁদের মধ্যে ৩৩ জন সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরেছেন। (Plane Crash News)
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রথমে ঘন কুয়াশার তত্ত্ব সামনে। তার পর জানা যায়, মাঝ আকাশে একঝাঁক পাখির আক্রমণের মুখে পড়েছিল বিমানটি। জরুরি অবতরণ করতে চেয়ে যেহেতু আবেদন জানিয়েছিলেন পাইলট, তাই যান্ত্রিক গোলযোগের তত্ত্বও উঠে আসে। এবার তাতেই নয়া সংযোজন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে আজেরবাইজান।
বুধবার কাস্পিয়ান সাগরের তীরে ভেঙে পড়ে বিমানটি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেনের রকেট বর্ষণের মাঝে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে বিমানটি। বলা হচ্ছে, রাশিয়ার রকেট প্রতিরোধী যুদ্ধবিমানের থোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। এ নিয়ে রাশিয়া বা আজেরবাইজানের তরফে কিছু বলা হয়নি। তবে ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিক আন্দ্রি কোভালেঙ্কোর দাবি, রাশিয়াই বিমানটিকে নামিয়েছে। তাঁর বক্তব্য, "গ্রোজনির আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়া উচিত ছিল রাশিয়ার, যা তারা করেনি। রাশিয়াই বিমানটির ক্ষতি করে। গ্রোজনিতে নামালে যাও বা প্রাণ বাঁচত যাত্রীদের, তা না করে কাজাখস্তান পাঠানো হয় বিমানটিকে।"
বিমানটি আজেবরবাইজানের বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনি যাচ্ছিল। মাঝ আকাশে যেখানে গতিপথ পরিবর্তন করে বিমানটি, জরুরি অবতরণের আবেদন জানায়, সেখানেই গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনীয় ড্রোনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল রাশিয়া। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতিমধ্যেই বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন। সমবেদনা জানিয়েছেন নিহতদের পরিবারকে। বিমানে সওয়ার ছিলেন আজেরবাইজানের ৪২ জন নাগরিক, রাশিয়ার ১০ জন।