কলকাতা: প্রয়াত কিংবদন্তি প্রাক্তন হকি প্লেয়ার কেশব দত্ত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


নিজের ট্যুইটারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘বিশ্ব হকি একজন সত্যিকারের কিংবদন্তিকে হারাল। কেশব দত্তের মৃত্যুর খবর শুনে ভীষণভাবে দুঃখিত। ১৯৪৮ ও ১৯৫২, ২ বার অলিম্পিক্সে সোনা জিতেছিলেন তিনি। দেশের ও বাংলার জন্য একজন চ্যাম্পিয়ন তিনি। ওঁনার আত্মার শান্তি পাক। ওঁনার পরিবারের প্রতি সমবেদনা।’


 






১৯২৫ সালে লাহোরে জন্ম নিয়েছিলেন কেশব দত্ত। পড়াশুনো ছাড়াও খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই। ব্যাডমিন্ট ও অ্যাথলেটিক্স খেলতেন ছোটবেলা। এরপর হকিতে আগ্রহ জন্মায়। লাহোর থেকে মুম্বই চলে আসেন ১৯৫০ সালে। তাঁর ২ বছর বাদে পাকাপাকিভাবে কলকাতা চলে আসেন। ন্যাশনাল চ্যাম্পয়নশিপে মুম্বই ও কলকাতার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন কেশব দত্ত।


১৯৪৮ সালে লন্ডন অলিম্পিক্সে সোনা জিতেছিল ভারতীয় হকি দল। সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন কেশব দত্ত। ৪ বছর বাদে অলিম্পিক্সে ভারতীয় দলের সহ অধিনায়কও ছিলেন তিনি। হেলসিঙ্কিতে ১৯৫২ সালে সেই অলিম্পিক্সেও সোনা জিতছিল ভারত।  


কলকাতায় এসে মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে দীর্ঘদিন খেলেছেন কেশব দত্ত। তৎকালীন মোহনবাগানের হকি সেক্রেটারি ছিলেন বিখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা জহর গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর চোখে পড়ে যান কেশব দত্ত। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কলকাতা ময়দানে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। ২০১৯ সালে মোহনবাগানের তরফে মোহনবাগান রত্ন সম্মানে সম্মানিত করা হয় কেশব দত্তকে। সাধারণত ফুটবলারদেরই এই সম্মান দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্র তিনিই একমাত্র ব্যতিক্রমী ছিলেন।


মোহনবাগানের হয়ে রেকর্ড ৬ বার কলকাতা লিগ জিতেছেন কেশব দত্ত। এছাড়াও ৩ বার বেটন কাপ জিতেছেন।


বেঙ্গল ইয়ং স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাব ও কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের পক্ষ থেকে কেশব দত্তকে জীবন কৃতি সম্মান দেওয়া হয়।


কেশব দত্তের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলা ও দেশের ক্রীড়া মহলে। মৃত্যুর সময়ে তিনি রেখে গিয়েছেন তাঁর ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে।