ইম্ফল: নারী-নিগ্রহের (Naked Woman Being Paraded) ভয়ঙ্কর ভিডিও ভাইরাল (Manipur Viral Video Incident) হওয়ার ১ দিন পর মণিপুরে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত (Main Accused Arrested)। ঘটনাটি অবশ্য় আড়াই মাসের পুরনো। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, এত দিন কী করছিল মণিপুর প্রশাসন? এত পরে তদন্ত করে ঠিক কতটা তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা সম্ভব? মণিপুরে মুখ্য়মন্ত্রী এন বীরেন সিংহের অবশ্য় দাবি, অপরাধীদের প্রত্যেকের যাতে মৃত্যুদণ্ড-সহ সর্বোচ্চ শাস্তির ব্য়বস্থা করা যেতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে। 


অভিযুক্ত সম্পর্কে ...
ধৃতের নাম হেরাদাস। ৩২ বছরের যুবককে থৌবাল জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ভিডিও-র সূত্র ধরেই তার হদিস পেয়েছে পুলিশ। ভাইরাল ভিডিওয় হেরাদাসকে সবুজ টি-শার্ট পরে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু কবে ধরা পড়বে বাকি অভিযুক্তরা? মুখ্যমন্ত্রী তথা তামাম মণিপুর প্রশাসনের আশ্বাস, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই জঘন্য কাজের সঙ্গে জড়িতদের প্রত্যেককে ধরা হবে। তত দিনে বড় দেরি হয়ে যাবে না তো? এমনিতেই ঘটনার আড়াই মাস পরে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। এখনও অভিযুক্তদের সকলকে ধরতে না পারলে নির্যাতিতাদের ন্যায়বিচার সম্ভাবনা পাওয়ার আশা কতটুকু? 


প্রতিক্রিয়া নানা মহলে...
আজ সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে জঘন্য এই ঘটনার কড়া নিন্দা শোনা যায়। মোদি বলেন, 'মণিপুরের কন্যাদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। গোটা দেশের পক্ষে তা লজ্জার, অপরাধীদের মোটেও রেয়াত করা হবে না।' কড়া বার্তা দিয়েছ সুপ্রিম কোর্টও। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, সরকার কিছু না করলে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপ করবে শীর্ষ আদালত। 


কী ঘটেছিল?
প্রথমে গণধর্ষণ, তার পর সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটানো। এতেই শেষ নয়। নির্যাতিতারা যখন রেহাইয়ের আর্জি জানিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছেন, তখনও তাঁদের দেদার 'শ্লীলতাহানি' চলেছে। হিংসা-জর্জরিত মণিপুরে নারী-নিগ্রহের এমন ভিডিও ভাইরাল হতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ও রাজ্যের মুখ্য়সচিবকে তড়িঘড়ি ফোন করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারির নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কিন্তু প্রশ্ন একটাই। গত কয়েক মাস ধরে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হওয়া সত্ত্বেও কড়া পদক্ষেপ কেন করা হয়নি? প্রসঙ্গত, ঘটনার ঠিক এক দিন আগে মেইতেই এবং কুকি জনজাতির মধ্য়ে সংঘর্ষে জ্বলে উঠেছিল মণিপুর। বস্তুত, মেইতেই-দের তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবি ঘিরে গত কয়েক মাস ধরেই হিংসা-জর্জরিত হয়ে রয়েছে উত্তরপূর্বের এই রাজ্য। কিন্তু তার পরও কেন হুঁশ নেই প্রশাসনের? আগে থেকে সতর্ক হলে কি এই পৈশাচিক ঘটনা এড়ানো যেত না? উত্তর নেই। 


আরও পড়ুন:'বন্দে মাতরম উচ্চারণ করতে পারব না', সপা বিধায়কের মন্তব্যে উত্তাল মহারাষ্ট্র বিধানসভা; শুরু বিতর্ক