মুম্বই : ফের বিতর্ক উস্কালেন সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমি। 'বন্দে মাতরম' নিয়ে তাঁর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কার্যত উত্তাল হয়ে উঠল মহারাষ্ট্র বিধানসভা। সপা বিধায়কের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান বিজেপি বিধায়করা। তুমুল হইহট্টগোলের জেরে বিধানসভা স্থগিত রাখতে বাধ্য হন অধ্যক্ষ। সপা-র এক জনপ্রতিনিধির এহেন মন্তব্য নিয়ে বিরোধী শিবিরকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। 


সম্ভাজিনগর জেলায় অশান্তির ঘটনার কথা বলতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন আজমি। তিনি বলেন, "বন্দে মাতরম'-কে সম্মান করি। কিন্তু, আমি এটা পড়তে পারব না। কারণ, আমার ধর্ম বলে, আমরা 'আল্লা' ছাড়া কারও কাছে মাথা ঝোঁকাতে পারব না।" তাঁর সংযোজন, "কেউ কেউ বলে থাকেন, ভারতে থাকতে গেলে, বন্দে মাতরম বলতেই হবে। কিন্তু, আমরা তা করতে পারব না। কারণ, আমরা একমাত্র আল্লায় বিশ্বাস করি। আমরা বন্দে মাতরমে মাথা ঝোঁকাতে পারব না, কারণ আমরা একমাত্র আল্লায় বিশ্বাস করি। আমরা মায়ের কাছেও মাথা ঝোঁকাই না।" 


 






তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভায় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়ে যায়। নিয়মমত মধ্যস্থতা করেন অধ্যক্ষ রাহুল নারওয়েকার। তিনি বিধায়কদের কক্ষের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানান। অধ্যক্ষ বলেন, 'এই ইস্যুতে আজমির মন্তব্য অপ্রাসঙ্গিক। ওঁর উচিত আলোচনার জন্য তালিকাভুক্ত ইস্যুতে নজর দেওয়া।' বিধানসভায় স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য অধ্যক্ষ চেষ্টা করলেও, বিজেপি বিধায়কদের প্রতিবাদ চলতে থাকে। যার জেরে ১০ মিনিটের জন্য মুলতুবি রাখা হয় বিধানসভা। 


এদিকে সপা বিধায়কের মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। বিধানসভার বাইরেও এই ইস্যুতে কথা বলার সময়, একই মন্তব্যে অনড় থাকেন আজমি। যা নিয়ে সপা বিধায়ককে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা ট্যুইটারে একহাত নেন আজমিকে। তিনি লেখেন, 'I-N-D-I-A-র অংশ সমাজবাদী পার্টি। আর তাদের বিধানয় কি না মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বলছেন, বন্দে মাতরম বলব না। এটা আমার ধর্মের বিরোধী। ওরা ঔরঙ্গজেবের কাছে মাথা নত করেন। কিন্তু, বন্দে মাতরম উচ্চারণ থেকে দূরে থাকেন। যারা নিজেদের নামে 'ভারত' নাম রাখেন, তাঁদের কাজ সবসময় কেন ভারত-বিরোধী ?'


এর আগেও একাধিক মন্তব্যে বিতর্ক বাঁধিয়েছেন সপার এই বিধায়ক। গত বছর তিনি অভিনেতা রণবীর সিংয়ের নগ্ন ফটোশ্যুটের বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন। তাতে রাজনীতির রংও লাগান। হিন্দিতে ট্যুইট করেন, 'যদি শরীর উন্মুক্ত রাখাকে শিল্প ও স্বাধীনতা বলা হয়, তাহলে কোনও মেয়ে যদি নিজের সংস্কৃতি মেনে শরীর হিজাবে ঢেকে রাখেন, সেটাকে অত্যাচার এবং ধর্মীয় বৈষম্য বলা হবে কেন ?'


২০১৭ সালে বেঙ্গালুরুতে কিছু মহিলাকে নিগ্রহ করা হয়। যা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিতর্ক উস্কে দেন আজমি। বলেন, 'অনেক রাতে যখন কোনও কোনও মহিলা অর্ধেক পোশাকে বন্ধুদের সঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন, তখন এই ধরনের ঘটনা ঘটে।'