কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: নয় নয় করে পেরিয়ে গেছে ছ’টা বছর। বুধবার খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করেছে আদালত।
জামাত জঙ্গি কওসর ওরফে বোমারু মিজানকে ২৯ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল নগর দায়রা আদালত। আর এই রায় শুনে খুশির হাওয়া বর্ধমানে। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, দারুণ খুশির খবর, বিজয় উৎসব করার দিন। ২০১৪-র অষ্টমীর সকালে সবাই যখন দুর্গোৎসবে মাতোয়াড়া, তখন ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল এই বাড়ি। মৃত্যু হয় দু’জনের।
কওসরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ফরেনার্স অ্যাক্ট বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ২০১৪-র ২ অক্টোবর অষ্টমীর সকালে তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল বর্ধমানের খাগড়াগড়। মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। চার বছর পর ২০১৮-র অগাস্টে বেঙ্গালুরু থেকে কওসরকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে দাবি, খাগড়াগড়ের যে ভাড়াবাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেখানেই আইইডি তৈরির কারবার চালাত জামাত জঙ্গিরা। যে নেটওয়ার্কের মাথা ছিল কওসর। সে ছিল বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠন ‘জামাত-উল-মুজাহিদিনের’ ভারতীয় শাখার প্রধান। বাংলাদেশে বিস্ফোরণের ঘটনায় সাজাও হয়েছিল কওসরের। প্রতিবেশী দেশে তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও ছিল। তবে বাংলাদেশে একবার পুলিশের হাত থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল শাগরেদরা।
তদন্তে উঠে আসে জঙ্গি-যোগের কথা। ষড়যন্ত্রের জাল যে কতদূর বিস্তৃত ছিল, ক্রমে সেই তথ্যও সামনে আসে। সেদিনের ঘটনা মনে পড়লে আজও আতঙ্ক গ্রাস করে খাগড়াগড়বাসীর মনে। এদিনের আদালতের রায় কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে তাঁদের। তবে আরও কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তাঁরা। খাগড়াগড়ের বাসিন্দা চৌধুরী মোল্লা আলির কথায়, মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন হলে ভাল হত।
এই বাড়ির দোতলা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে, আতঙ্ক ছড়ায়, তদন্তভার নেয় এনআইএ, অভিযুক্তদের গ্রেফতার, সাজা, আজ সিল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বাড়ি । খাগড়াগড়কাণ্ডের পর দামোদর দিয়ে অনেক জল পেরিয়ে গেছে। সেই অভিশপ্ত দিনের কথা এখন ভুলতে চান এলাকাবাসী।