নয়াদিল্লি: অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সারা বিশ্ব। করোনার জেরে পাল্টে গিয়েছে জীবনের চেনা ছন্দ। সংক্রমণ রুখতে বিশ্বের একাধিক দেশ লকডাউন জারি করেছে। পাশাপাশি এই আবহে টিকাকরণের উপর জোর দিচ্ছে অধিকাংশ দেশ। পরীক্ষামূলক প্রয়োগ থেকে টিকার ছাড়পত্র পাওয়া সময় সাপেক্ষ বিষয়। তবে গত একবছরে সারা বিশ্বে রেকর্ড সংখ্যক ভ্যাকসিন মিলেছে।
বর্তামানে ৯০টি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। কয়েক ধাপে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বেশ কিছু ভ্যাকসিন। প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আছে ৭৭টি ভ্যাকসিন। এবার দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ভ্যাকসিন প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
১. ফাইজার-বায়োএনটেক: এই ভ্যাকসিন বর্তমানে বহু দেশেই চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালে আছে। মার্কিন প্রদেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়াও জরুরি ভিত্তিতেও ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে বহু দেশ।
২. মডার্না: বস্টনের সংস্থা এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহু দেশ ভ্যাকসিনের ব্যবহার শুরু করেছে।
৩. গামালেয়া: এই ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যবহারিক প্রয়োগ হয় রাশিয়ায়।
৪. অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা: প্রস্তুতকারী সংস্থার দাবি এই ভ্যাকসিন ৭৫ শতাংশ কার্যকরী। ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ সহ বিশ্বের বহু দেশেই প্রয়োগ করা হচ্ছে এই ভ্যাকসিন। তবে ডেনমার্কে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ বন্ধ করা হয়েছে।
৫. ক্যানসিনো: এটি সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাকসিন। যা চিনে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও বহু দেশেই ব্যবহার করা হচ্ছে।
৬. জনসন এন্ড জনসন: এটাও সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাকসিন। ব্রাজিল, আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে। ডেনমার্ক সহ একাধিক দেশ আবার এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে।
৭. ভেক্টর ইনস্টিটিউট: রাশিয়ায় প্রথম এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।
৮. সিনোফার্ম: চিনের সংস্থা এই ভ্য়াকসিন প্রস্তুত করে। চিন সহ আরবে এই টিকাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহার করছে বিশ্বের বহু দেশ।
৯. সিনোভ্যাক: চিনের অনুমোদন প্রাপ্ত এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে আরব সহ বহু দেশে।
১০. সিনোফার্ম-উহান: চিন এই ভ্যাকসিন ব্যবহারে অনুমোদন দিয়েছে। আরবে শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনের ব্যবহারিক প্রয়োগ।
১১. ভারত বায়োটেক- চলতি বছর জানুযারি মাসে ভারতে এই টিকা প্রয়োগের অনুমতি দেয় কেন্দ্র। যে তিনটি টিকা বর্তমানে প্রয়োগ করা হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম এটি।
কীভাবে পরীক্ষামূলক পর্যায় থেকে প্রয়োগ হয় ভ্যাকসিনের
প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল : এই পর্যায়ে ইঁদুর, হনুমানের মতো প্রাণীর শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে থাকেন বিজ্ঞানীরা।
ফেজ ওয়ান সেফটি ট্রায়াল: কম পরিমাণ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়, তার কার্যকারীতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বুঝতে।
ফেজ টু ট্রায়াল: এই পর্যায়ে ১০০ জনের উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। সেই দলে সব বয়সের মানুষই থাকতে পারে। বয়স ভিত্তিতে ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা বুঝতে এই পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়।
ফেজ থ্রি ট্রায়াল: ট্রায়ালের এই পর্যায়ে দেখা হয় যাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে কতজন আক্রান্ত হয়েছেন। ভ্যাকসিন কার্যকারীতা সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়।