নয়াদিল্লি ও কলকাতা: ভ্যাকসিন চেয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার, ওই চিঠিরক জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন।
মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিখেছেন, করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকেই রাজ্যগুলিকে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ভ্যাকসিন সহ নানা বিষয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
প্রতিশ্রুতি মতো কেন্দ্র প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের করোনা যোদ্ধা ও ৪৫ বছরের ওপর যাঁদের বয়স, তাঁদেরকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে।
পশ্চিমবঙ্গকে এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩৪০ ডোজ টিকা পাঠানো হয়েছে। আরও ২ লক্ষ ডোজ পাঠানোর জন্য তৈরি।
চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গকে ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে ১৮ লক্ষ ৩৮ হাজার এন-৯৫ মাস্ক এবং ৪ লক্ষ ৮৪ হাজার পিপিই কিট, ১ হাজার ২৪৫টি ভেন্টিলেটর এবং সাড়ে ৪৩ লক্ষ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট।
এছাড়াও ৫টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। যার মধ্যে ২টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি, বিনামূল্যে প্রায় ২ হাজার ৪০০ অক্সিজেন সিলিন্ডার বরাদ্দ করা হয়েছে রাজ্যের জন্য। যার মধ্যে ৭০০ টি ২১ তারিখের মধ্যে পৌঁছে যাবে।
হর্ষবর্ধন লিখেছেন, ইতিমধ্যেই ৯৪ হাজার ৪০০ ভায়াল রেমডেসিভির বরাদ্দ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জন্য। কিন্তু তুলনায় রাজ্যে করোনা পরীক্ষার হার কম, খোঁচা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর।
প্রসঙ্গত, বুধবার তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সংক্রমণ রুখতে গেলে বিনামূল্যে ভ্যাকসিনেশনে জোর দিতে হবে। সেজন্য ভ্যাকসিনের জোগান বাড়াতে হবে। এর আগে সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে চেয়ে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেকথা মনে করিয়ে ৫ মে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সবাইকে যাতে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া যায়, সে জন্য ডোজ কিনতে চেয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আপনাকে চিঠি দিয়েছিলাম। এখনও তার জবাব আসেনি। এই মুহূর্তে হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন, ওষুধ এবং ভ্যাকসিনের ঘাটতি ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। সেজন্য ফের চিঠি লিখছি।
এদিকে, ভ্যাকসিন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ মমতা সরকার। করোনা মোকাবিলায় রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিক কেন্দ্র। এই আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার।
দেশজুড়ে ভ্যাকসিনেশনের অভিন্ন নীতি এবং ভ্যাকসিন বণ্টন রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈষম্য যাতে না হয় তার আবেদন জানানো হয়েছে।
এই মুহূর্তে কোভিশিল্ডের ডোজপিছু কেন্দ্রের থেকে ১৫০ টাকা, রাজ্যের থেকে ৩০০ টাকা ও বেসরকারি হাসপাতালের থেকে ৬০০ টাকা নেয় পুণের সিরাম ইন্সিটিটিউট।
কোভ্যাকসিনের প্রতি ডোজ ভারত বায়োটেক কেন্দ্রের জন্য দাম রেখেছে ১৫০ টাকা, রাজ্যকে বিক্রি করে ৪০০ টাকায় এবং বেসরকারি হাসপাতালের জন্য দাম ১২০০ টাকা।