কলকাতা: নজরুল মঞ্চে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যাদবপুরের ছায়া। ফের পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে রাজ্যপাল। রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরে এনআরসি মানছি না, গো ব্যাক স্লোগান পড়ুয়াদের। রাজ্যপালকে ঘিরে সিএএ-এনআরসি বিরোধী পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। গাড়িতেই আটকে পড়েন রাজ্যপাল। পরে, সমাবর্তনস্থল থেকে বেরিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আচার্যের উপস্থিতি নিয়ে যে গণ্ডগোল হবে, তার ইঙ্গিত ছিলই। রাজ্যপাল এলে বিক্ষোভ হবেই বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ। একই সুর শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের কর্মচারী সংগঠনের গলাতেও। সেই ঘটনাই প্রত্যক্ষ করা হল। এদিন রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরে এমন বিক্ষোভের মধ্যেই নজরুল মঞ্চে গিয়ে পৌঁছন নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সাম্মানিক ডি’লিট পান।
পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠান শুরু করা দুষ্কর হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি শান্ত করতে উপাচার্য নিজে পড়ুয়াদের কাছে কার্যত হাত জোড় করতে অনুরোধ জানান, যাতে তাঁরা বিক্ষোভ থামিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তাঁর কোনও কথাই মানতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবি, আচার্য ফিরে না গেলে তাঁরা কিছুতেই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না।
মঙ্গলবারের অনু্ষ্ঠান ঘিরে তাই নজরুল মঞ্চে পুলিশের কড়া নজরদারিও ছিল। সমাবর্তনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতির কথা থাকলেও, তিনি শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করেন। এর আগে যাদবপুরেও সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েও পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। গত ২৪ ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের দিন বিক্ষোভের জেরে মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছতেই পারেননি আচার্য জগদীপ ধনকড়। দরজা আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূলের কর্মচারী সমিতি।
পরে যাদবপুরের প্রাক্তনীদের এক অনুষ্ঠানে আজ যোগ দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ওই অভিজ্ঞতার পর তিনি আতঙ্কে রয়েছেন।  রাজ্যপাল লেখেন,  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিংসা উদ্বেগের বিষয়। কোনওভাবেই তা মেনে নেওয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের একাংশ জেএনইউকাণ্ডের তীব্র সমালোচক। ১৫ দিন আগে যাদবপুরকাণ্ডের পর তাঁরা নীরব ছিলেন। এই নীরবতা দুঃখজনক। রাজ্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষ্ক্রিয়তার দরুণ আচার্যের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ক্যাম্পাসে হিংসা ও বিশৃঙ্খলা নিয়ে এই বাছাবাছি কেন? বাড়িতে আগুন লাগলে, তাকেই প্রথমে গুরুত্ব দিতে হয়। আমি নিশ্চিত এ নিয়ে আত্মানুসন্ধান হবে। ট্যুইট রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের।