সন্দীপ সরকার, কলকাতা: প্রায় ১৩ ঘণ্টা ধরে রোগীকে নিয়ে ছোটাছুটি করেও কোথাও বেড না পেয়ে, কার্যত বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল কলকাতায়। শহরের ৫ সরকারি হাসপাতালে গিয়েও মেলেনি চিকিৎসা। এমনটাই দাবি করল পরিবার।
মৃত শ্যামনারায়ণ শাহ পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, গতকাল সন্ধে ৭টা নাগাদ সেরিব্রাল অ্যাটাক হয় ৬০ বছরের ওই প্রৌঢ়ের।
রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এসএসকেএমে আনা হয়। সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, রোগীর মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। সেখান থেকে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়।
রাত সোয়া ১২টা নাগাদ সেখানে নিয়ে গেলেও রোগীর ঠাঁই হয়নি। এরপর, দেড়টা নাগাদ রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে।
সেখান থেকে রাত সাড়ে ৩টের সময় আরজি করে। সেখানেও জায়গা না হওয়ায়, ভোর ৫টার সময় নিয়ে যাওয়া হয় বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেসে।
পরিবারের দাবি, শেষ পর্যন্ত কোথাও বেড না পাওয়ায় ভোর সাড়ে ৫টায় ফের রোগীকে আনা হয় এসএসকেএমে।
শেষপর্যন্ত আজ ভোরে ফের এসএসকেএমের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসা হয় রোগীকে। সেখানে ইমার্জেন্সিতে রোগীকে স্যালাইন দেওয়া শুরু হয়।
পরিবারের দাবি, ঘণ্টাতিনেক জরুরি বিভাগে বিনা চিকিৎসায় পড়েছিলেন ওই রোগী। কিন্তু, সকাল ৯টা নাগাদ সেখান থেকেও সরিয়ে নিতে বলা হয়।
এরপর সহকারী সুপারের দ্বারস্থ হয় পরিবার। সহকারী সুপার ভর্তির জন্য লিখে দেন। অভিযোগ, এরপরও মেলেনি স্বস্তি।
পরিবারের দাবি, কোন বিভাগে ভর্তি তা নিয়ে নিউরো সার্জারি ও নিউরো মেডিসিনের টানাপোড়েন শুরু হয়।
৩ঘণ্টা এভাবে পড়ে থাকতে থাকতেই, সকাল ১১টা নাগাদ মৃত্যু হয় রোগীর।
এসএসকেএম-এর সুপার এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। বেড না থাকলেও, আমরা পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। ঠিক কী ঘটেছিল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গতমাসের শেষদিকে, চিকিৎসার গাফিলতিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর অভিযোগঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের রাজারহাট ক্যাম্পাস। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে মারপিটে জড়িয়ে পড়েন হাসপাতালের দুই দল কর্মী।