সুমন ঘড়াই, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: আলিপুরে স্মার্ট সিটিকে জায়গা ছেড়ে দিতে ঐতিহাসিক বিজি প্রেস বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হল। ব্রিটিশ জমানার ছাপাখানা নিলামের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। প্রশ্ন উঠেছে, বিজি প্রেসের কর্মীদের ভবিষ্যত নিয়ে। নবান্ন সূত্রে খবর, বিজি প্রেসের কোনও কর্মীর কাজ যাবে না। প্রত্যেককে অন্য বিভাগে বদলি করা হবে।


বহু ইতিহাসের সাক্ষী রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন বিজি প্রেস বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হল। প্রায় দুশো বছরের পুরনো আকাশি-নীল রঙের এই হেরিটেজ তিনতলা ভবন, যা নিলামে তোলার জন্য গত সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দফতর। 


আলিপুর জেলের পিছনে যে জমিতে বিজি প্রেস রয়েছে, সেখানে গড়ে উঠবে গ্রিন ও স্মার্ট সিটি। তার জন্য বিক্রি করে দেওয়া হবে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া প্রায় দুশো বছরের পুরনো এই সরকারি ছাপাখানা 


যার পুরো নাম বেঙ্গল গভর্নমেন্ট প্রেস। সংক্ষেপে বিজি প্রেস নামে পরিচিত।  শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের আওতাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই ছাপাখানায় বহু বই ও নথি ছাপা হয়েছে। অনেক পুরনো নথি রয়েছে বিজি প্রেসের হেফাজতে।  


রাজ্য সরকারের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ছাপাখানার ভবন, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র নিলামে বিক্রি হবে। নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে অনলাইনে। 



নবান্ন সূত্রে খবর, যে জমির ওপর বিজি প্রেস অবস্থিত, তা হাউসিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন বা হিডকোর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। হিডকো সম্পত্তির প্রাথমিক মূল্যায়ণ করার পর তা অনলাইন নিলামে তোলা হবে। গ্রিন ও স্মার্ট সিটি তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই আলিপুর জেল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে সরানো হয়েছে। 


প্রেসিডেন্সি জেল সরানোর প্রশাসনিক প্রক্রিয়াও চলছে। এবার নিলামের তালিকায় নাম উঠল বিজি প্রেসের। ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট প্রেস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাবলু ঘোষ বলেন, ''এটা হেরিটেজ বিল্ডিং। ব্রিটিশ আমলের। আগে দেড় হাজার কর্মী ছিল। এখন সাড়ে তিনশো কর্মী। এটা বিক্রির বিপক্ষে আমরা। এটাকে রেখে কিছু করলেই পারত।''


নবান্ন সূত্রে খবর, বিজি প্রেসের কোনও কর্মচারী বা শ্রমিককে কাজ হারাতে হবে না। সবাইকে অন্যান্য সরকারি বিভাগে প্রেস সংক্রান্ত কাজে বদলি করা হবে। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।