কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ স্কুল-কলেজ। পঠন-পাঠন বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে আজ যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ চলে। এরই মধ্যে ক্লাস শুরু হয়ে গেল রাজ্যের আইটিআই এবং পলিটেকনিক কলেজগুলিতে। 


এপ্রসঙ্গে হুমায়ুন কবীর বলেন, কারিগরি শিক্ষা দফতর প্রাক্টিক্যাল নির্ভর। এই দফতরের ৭৫ শতাংশ কাজ হাতে-কলমে। আর বাকি ২৫ শতাংশ থিওরি। স্কিল ডেভেলপমেন্ট তো আর অনলাইনে হবে না। গত বছর মার্চ থেকে এর পঠন-পাঠন বন্ধ রয়েছে। এবার না খুললে এই জেনারেশনের ছেলে-মেয়েদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট কিছুই হবে না। কিছু শিখবে না।


এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে আজ বিক্ষোভ দেখান একাংশ ছাত্র। আগ্রহী পড়ুয়াদের ভ্যাকসিন নিয়ে ক্লাস শুরুর দাবি জানান পড়ুয়ারা। রাজ্যের অন্যান্য স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও খোলার দাবি জানানো হয়। এই দাবিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংয়ের সামনে বিক্ষোভ চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেওয়া হয় স্মারকলিপি।


অন্যদিকে অবিলম্বে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবি ওঠে আজ। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। ডিনের সঙ্গে বৈঠকও করেন।


প্রসঙ্গত, করোনা আবহে দীর্ঘদিন রাজ্যের স্কুল কলেজে পঠন-পাঠন বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, "তৃতীয় ঢেউ ভয়ঙ্কর না হলে পুজোর পরে স্কুল খুলবে। মহারাষ্ট্র, কেরলের মতো কয়েক রাজ্যের পরিস্থিতি ভাল নয়। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে পুজোর ছুটির পরেই খুলবে স্কুল।"এপ্রসঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসু বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যথার্থ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছিল। প্রাইমারি স্কুল আগে খোলা উচিত। আমেরিকায় তো স্কুল খোলাই। সেপ্টেম্বর থেকে কলেজ, ইউনিভার্সিটি শুরু হবে। এখন মাস্ক পরা হবে কি হবে না দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, করোনা আবহে স্কুল খোলার আগে বিষয়টি নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা করা দরকার। তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ থাকলে যেমন পড়ুয়াদের ক্ষতি, তেমনি স্কুল খোলার ফলে অসুখ-বিসুখ বাড়লে তাও চিন্তার। প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০-র ১৪ মার্চ বন্ধ হয়েছিল স্কুলে সশরীরে পঠনপাঠন। প্রায় দেড় বছর, শৈশব থেকে হারিয়ে গেছে স্কুল-জীবন। এখন শুধুই ভার্চুয়াল ক্লাস। পঠনপাঠনে পুরোপুরি অনলাইন নির্ভরতা। টিফিন ভাগ করে খাওয়া নেই। ছুটির ঘণ্টা বাজলেই স্কুলের মাঠে হুড়োহুড়ি নেই।