কলকাতা: হাইকোর্টে ভবানীপুর ভোট-মামলার শুনানি শেষ। রায়দান স্থগিত রাখল আদালত। এদিনের শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করল হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল মন্তব্য করেন, ‘মামলা দায়েরের এতদিন পরেও প্রশ্নের কেন উত্তর নেই কমিশনের কাছে? নির্বাচন কমিশনের হলফনামা ত্রুটিপূর্ণ ও ভুলে ভরা’।


ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মুখ্যসচিব কী উদ্দেশ্য কমিশনকে চিঠি লিখেছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।  মুখ্যসচিব কেন চিঠিতে সাংবিধানিক সঙ্কটের উল্লেখ করেছেন,  একটি বিধানসভায় সাংবিধানিক সঙ্কট হলে, বাকিগুলির জন্য কেন নয়? একটা নির্বাচন করাতে কত টাকা খরচ হয়!দেশজুড়ে প্রার্থীরা একটি আসনে জিতছেন, ছাড়ছেন, আবার ভোট হচ্ছে।’


হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, জনগণ কেন এত টাকা দেবেন? 


উল্লেখ্য, ভবানীপুরে উপনির্বাচন এখনই নাহলে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে। এমন আশঙ্কা কে প্রকাশ করেছিল? এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আজকের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তা  আদালতকে জানাতে বলা হয়েছিল। মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, বেছে বেছে একটি বিধানসভার জন্য রাজ্যের মুখ্য সচিবের চিঠি লেখা নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার সামিল। তাই কমিশনের বিবৃতির তালিকা থেকে ৬ ও ৭ নম্বর প্যারাগ্রাফ বাদ দেওয়ার দাবি জানান মামলাকারীর আইনজীবী। তার প্রেক্ষিতেই কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট।


উল্লেখ্য,  কমিশনে মুখ্যসচিবের চিঠির এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভবানীপুর উপনির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল । দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর,উত্তর ২৪ পরগনার খড়দা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, নদিয়ার শান্তিপুর এবং কোচবিহারের দিনহাটা। রাজ্যের এই ৫ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও,  শুধু ভবানীপুরের নামই ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।


বিবৃতিতে কমিশন জানায়,মুখ্যসচিব কমিশনের নজরে এনেছেন যে, সংবিধানের ১৬৪(৪) ধারা অনুযায়ী একজন মন্ত্রী যদি ৬ মাসের মধ্যে বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য না হন, তাহলে মেয়াদ শেষে তাঁর মন্ত্রী পদ আর থাকবে না। ফলে দ্রুত নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সঙ্কট ও সরকারের শীর্ষ পদে শূন্যতা তৈরি হবে। তাই প্রশাসনিক প্রয়োজনীয়তা, জনস্বার্থ এবং রাজ্যের শীর্ষ পদে শূন্যতা এড়াতে ভবানীপুরে উপনির্বাচন করানো যেতে পারে। যেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।