দীপক ঘোষ, আশাবুল হোসেন, ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ভবানীপুর বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস। সিদ্ধান্ত নিল এআইসিসি। কংগ্রেস না লড়লে বামেরা আগেই ভবানীপুরে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়েছিল।  বিজেপি ৬ জনের নাম পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। সেই তালিকায় আছে কাঁকুড়গাছির নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিতের নাম।


মঙ্গলবার কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, তারা ভবানীপুরে প্রার্থী দেবে না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, ভবানীপুর উপনির্বাচনে দল প্রার্থী দেবে না।


এর মধ্যে প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূল।সূত্রের খবর,বুধবার চেতলার অহীন্দ্র মঞ্চে কর্মিসভার মধ্যে দিয়ে, প্রচার শুরু করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


কিন্তু, তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে ভবানীপুরে বিরোধী প্রার্থী কারা? প্রদেশ কংগ্রেস ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিল। কিন্তু, দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছে, ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া হবে না।এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল। 


বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার তরফে প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। এবার তারা সরে দাঁড়ানোয়, পুরনো সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভবানীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে সিপিএম। দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, কংগ্রেস না দাঁডালো অবশ্যই বামফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা করে প্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সূত্রের খবর, ভবানীপুর কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী হতে পারেন ডিওয়াইএফআই-এর কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কলতান দাশগুপ্ত।


এদিকে, বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্ব ৬ জনের নাম সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পাঠিয়েছে। সেই তালিকায় আছেন,কাঁকুড়গাছিতে নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার,প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়,রাজ্য সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়,বিধানসভা ভোটে বোলপুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়,বিগত ভোটে ভবানীপুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ এবং এন্টালির পরাজিত বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল।


কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এঁদের মধ্যে থেকে নাম চূড়ান্ত করবে। কিন্তু, শুধুমাত্র ভবানীপুরে কেন উপ নির্বাচন ঘোষণা হল? এই প্রশ্নে কি আদৌ আগের হুঙ্কার অনুযায়ী আদালতে যাবে বিজেপি? সুর আপাতত নরম গেরুয়া শিবিরের।  বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, আইনজীবী যদি বলেন, তাহলে কোর্টে লড়ব, এখনও কিছু ফাইনাল হয়নি, তবে আমরা ইলেকশনে লড়ব, কমিশন যা করেছে তা ঠিক নয়, অনৈতিক, কমিশনে ডেলিগেশন যাবে।


ভবানীপুরে বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার আগেই, তথাগত রায়ের একটি ট্যুইট অস্বস্তি বাড়িয়েছে। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি লিখেছেন....পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির উচিত ভবানীপুরে উপনির্বাচনে সুবোধকে প্রার্থী করা। কিন্তু কে এই সুবোধ?ওই যে, বিজেপি কার্যালয়ে ফুট-ফরমাশ খাটে, চপ-সিঙাড়া এনে দেয়!চপই তো পশ্চিমবঙ্গের ভবিষ্যৎ!


এ ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, যাঁরা দলের সিনিয়র নেতৃত্ব, তাঁরা কী করছেন সেটা দেখার জন্য দিল্লির নেতৃত্ব আছে।


এই ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, দিলীপের সঙ্গে দলের অন্য গোষ্ঠীর কোন্দল আছে।  বোঝা যাচ্ছে, এই সমস্ত কথা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে ওদের লোকজন নেই।


সবমিলিয়ে ভবানীপুরে উপনির্বাচন ঘিরে ক্রমশ চড়ছে রাজনৈতিক তরজার পারদ।