কলকাতা: ফের অমানবিকতার ছবি খাস কলকাতায়। কালীঘাটে হরিশ চ্যাটার্জি রোডের বাড়িতে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে রয়েছে সত্তরোর্ধ্ব নিঃসন্তান দম্পতি। জানা গিয়েছে, ২ দিন আগে পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হলেও কেউই আসেননি বলে অভিযোগ। সাহায্য মেলেনি প্রতিবেশিদেরও। কেউ এগিয়ে আসেননি ওই দম্পতিকে সাহায্য করতে। কোথায় ছিল পুলিস? প্রশ্ন উঠছে।  অভিযোগ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও। এরপরই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবিপি আনন্দ। ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরই দম্পতিকে উদ্ধারের তত্পরতা বাড়ে। 


শেষপর্যন্ত আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কালীঘাট থানার পুলিশের সহায়তায় ওই দম্পতিকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যখন পুলিস এসে পৌঁছয়, তখন রীতিমতো ধুঁকছেন তাঁরা। আপাতত এসএসকেএম-এই চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। যদিও এই দম্পতির পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে কোনওরকম সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর ও প্রতিবেশীদের। 


রাজ্যে ঊর্ধ্বমূখী কোভিড সংক্রমণের গ্রাফ। পর্যাপ্ত বেড এবং অক্সিজেনের অভাবে প্রতিদিনই হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগী এবং তাঁর পরিবার। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ। গতকাল প্রকাশিত রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের মেডিক্যাল বুলেটিন অনুযায়ী গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ২০৭ মানুষ। করোনা একদিনে প্রাণ কেড়েছে ৭৭ জনের। সবমিলিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ১৫৯ জন।


হিসেব অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বুধবার মোট টেস্ট হয়েছে ৫৪, ৯৩৬ জনের। পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩, ৮২১ জন। কলকাতাতেই করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২২ জন। সংক্রমণের নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগণা। সেখানে একদিনে ৩,৭৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের।


এর আগেও অমানবিকতার একাধিক ছবি উঠে এসেছে খাস কলকাতায়। কোথাও দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ে রয়েছে করোনা রোগীর মৃতদেহ। কোথাও আবার একাধিকবার ফোনেও সুরাহা মেলেনি। কখনও রোগীকে নিয়ে কখনও আবার মৃতদেহ নিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছে পরিবার। শুধু কলকাতাই নয়। শহরতলীতেও ছবিটা একই রকম। করোনা সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আতঙ্কও।