কলকাতা: হান জুনওয়ে ভারত থেকে চিনে তেরশোটি সিম পাচার করেছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে দাবি, সিমকার্ড জোগার করতে রীতিমতো জাল বিস্তার করেছিলেন হান। যদিও, এই অভিযোগ মানতে নারাজ তাঁর স্ত্রী।


ভারতে কি বড়সড় সাইবার ওয়ারফেয়ারের পরিকল্পনা ছিল? ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মালদার মিলিক সুলতানপুর থেকে চিনের নাগরিকের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় এই সন্দেহই জোরাল হচ্ছে।


NIA সূত্রে খবর, চিনে ১ হাজার ৩০০টি সিম পাচার করেছেন হান। এ ছাড়াও, চিনে ১ হাজার ডেটাবেস পাঠিয়েছেন। জানা গিয়েছে, সিমকার্ড জোগার করতে রীতিমতো জাল বিস্তার করেছিল হান, মাথায় ছিল সে নিজেই, একাজে নিজের স্ত্রীকেও ব্যবহার করেছিল, বর্তমানে হানের স্ত্রী রয়েছেন চিনের হেবেই প্রদেশে।


পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ STF-এর হাতে ধৃত লি টেংলি ও জু জুনফু, বাজার থেকে সিম ও ডেটাবেস কিনতেন। পরে সেগুলি দেওয়া হয় হানে-র গুরুগ্রামের হোটেলের ম্যানেজার সান ইংয়কে। 


তাঁর হাত দিয়েই সেগুলি পেতেন হান জুনওয়ে। সম্প্রতি সান-কে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ STF। এরপরই, জুনওয়ের নামে ব্লু-কর্নার নোটিস জারি হয়। তদন্তকারীদের সন্দেহ, এই সিমগুলো দিয়ে চিনে বসেই ভারতে সাইবার প্রতারণা করা হত।


পুলিশ সূত্রে খবর, সম্ভবত সিম বক্স নামে একটি বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করেছিল চিনা নাগরিক হান জুনওয়ে। সিম বক্সের মাধ্যমে টেলিফোনিক কলকে ডেটা কলে রূপান্তরিত করা যায়। একসঙ্গে, ব্যবহার করা যায় ৩২ থেকে ১৫০টি সিমকার্ড।


এতে বহু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও পরিচয় গোপন রেখে হাতানো যায় টাকা।  ইন্টারন্যাশনাল কলকে লোকাল করে পরিণত করা যায়। 


মুম্বই হামলার সময় এই সিমবক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে জঙ্গিদের নির্দেশ দিয়েছিল হ্যান্ডলাররা। ফোনগুলি পাকিস্তান থেকে করা হলেও, প্রাথমিকভাবে সেগুলি ভারতীয় বলে মনে হয়েছিল। অভিযোগ, সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে...কখনও অ্যাপের মাধ্যমে, কখনও ঋণ দেওয়ার নামে, গ্রাহকদের থেকে প্রতারণা করা হয়েছে।


তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ২০২০ সালে প্রায় ৮ কোটি টাকা দিয়ে গুরুগ্রামে ‘স্ট্রার স্প্রিং’ নামে এই হোটেলটি কিনেছিল চিনা যুবক হান। ২০১৯ থেকে ২ জন ব্যক্তি এই হোটেল চালাচ্ছিলেন।আপাতত এটি বন্ধ। বলা হচ্ছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে হোটেলটি। এখানে ৮০টি ঘর রয়েছে। মূলত চিন, কোরিয়া, জাপান থেকে আসা অতিথিরা উঠতেন। 


এরপর কিরণ নামে একজনের খোঁজ মেলে, যিনি নিজেকে এই বিশাল বাড়ির মালিক বলে দাবি করেন। গুরুগ্রামের এই হোটেল ছাড়াও, ধৃত চিনের নাগরিক হান জুনওয়ের আর কোনও সম্পত্তি আছে কিনা, সেই বিষয়টাও খতিয়ে দেখা হবে বলে স্টেট STF সূত্রে খবর।