রাজর্ষি দত্তগুপ্ত, কলকাতা: দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তী রহস্যজনক মৃত্যুর মামলায়, রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তলব করল সিআইডি। সূত্রের খবর, আগামী সোমবার ভবানীভবনে তলব করে শুভেন্দু অধিকারীকে নোটিস পাঠিয়েছে সিআইডি। সূত্রের দাবি, শুভব্রতর মৃত্যু সম্পর্কে কী বক্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর? তিনি কখন, কীভাবে শুভব্রতর গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা জানতে পারলেন? এরপর কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? শুভব্রতর স্ত্রী-র এখনকার অভিযোগ সম্পর্কে তাঁর মত কী?


২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর, শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি শান্তিকুঞ্জ থেকে মাত্র ১৫ ফুট দূরে তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের থাকার জায়গায় গুলিবিদ্ধ হন শুভেন্দু অধিকারীর তৎ‍কালীন নিরাপত্তারক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তী। শুভব্রতর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী তাঁর এফআইআর-এ জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সন্ধে অবধি কাঁথি হাসপাতালেই রাখা হয় তাঁর জখম স্বামীকে৷ পরে তাঁকে কলকাতায় অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়!


১৪ জুলাই মৃত্যু হয় শুভেন্দুর দেহরক্ষীর। সরকারিভাবে দাবি করা হয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন৷ ৩ বছর পরে, স্বামীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে, খুনের অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানায় এআইয়ার করেন মৃত পুলিশ কনস্টেবল শুভব্রত চক্রবর্তীর স্ত্রী!


শুভেন্দু অধিকারীর নাম করে অভিযোগপত্রে প্রশ্ন তোলা হয়, শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষী হওয়া সত্ত্বেও, অ্যাম্বুল্যান্স পেতে কেন দেরি হয়েছিল? কেন কলকাতায় স্থানান্তর করতে বিলম্ব হল? অভিযোগপত্রে শুভেন্দুর প্রাক্তন দেহরক্ষীর স্ত্রী দাবি করেন, শুভেন্দু শক্তিশালী। সবাই ওনার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পান! তাই সেই সময় তিনিও কিছু বলে উঠতে পারেননি। ১২ জুলাই তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি! শুরু হয় খুনের মামলার তদন্ত ১৮ জুলাই কাঁথি থানায় যায় সিআইডির আধিকারিকরা। পুলিশ ও কাঁথি হাসপাতালের ২ চিকিৎসকে, নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে কথা বলে।


২০ জুলাই তৎকালীন আইসি কাঁথি সুনয়ন বসু এবং এই সুশান্ত যশ এবং একজন নকস্টেবন পিনাকী ঘোষকে ভবানীভবনে ডেকে বয়ান রেকর্ড করে। ২৯ জুলাই আবার তৎকালীন ৪ নিরাপত্তারক্ষীকে তলব করে। মৃত পুলিশ কর্মী শুভব্রত চক্রবর্তীর মহিষাদলের বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন সিআইডি। শান্তিকুঞ্জের উল্টোদিকে নিরাপত্তারক্ষীদের থাকার জায়গাতেও যান সিআইডি অফিসারেরা। এই প্রেক্ষাপটেই শুভব্রত চক্রবর্তীর রহস্যমৃত্যুর মামলায় আগামী সোমবার শুভেন্দু অধিকারীকে তলব করেছে সিআইডি। সূত্রের খবর, ওইদিনই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।