আশাবুল হোসেন, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই তদন্ত (Post Poll Violance) নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার (Anupam Hazra) ফেসবুক পোস্টে (Anupam Hazra Facebook) শুরু বিতর্ক! কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা  সংস্থার গতিবিধি নিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতা কী করে কথা বলতে পারেন? প্রশ্ন বিরোধীদের। অনুপমের মন্তব্যের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। 


কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata Highcourt) নির্দেশে রাজ্যে ভোট পরবর্তী গুরুতর হিংসার অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই। সোমবারই মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের একটি ধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। 


এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন হল, আগামী দিনে বাংলায় কি সিবিআইয়ের (CBI) তত্‍পরতা আরও বাড়বে? বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার একটি পোস্ট ঘিরে এই প্রশ্ন আরও জোরাল হয়েছে!



৬ নভেম্বর, ভাইফোঁটার দিন পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapur) ভগবানপুরে (Bhagwanpur) চন্দন মাইতি নামে এক বিজেপি নেতাকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে, এদিন ফেসবুকে পোস্ট করে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা দাবি করেন, ভোট পরবর্তী হিংসা এবং বাংলায় চলতে থাকা অপশাসন ও দুর্নীতি নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ডে পি নাড্ডার সঙ্গে ৪০ মিনিট আলোচনা হয়েছে। 


পাশাপাশি বিজেপি নেতা আরও দাবি করেন, জেপি নাড্ডা তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার দ্বারা চলতে থাকা সমস্ত ঘটনার তদন্ত আরও জোরদার হবে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার এই পোস্টের পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ নরেন্দ্র মোদির হাতে থাকা কর্মীবর্গ মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে CBI।


কিন্তু বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বা বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা কেউই সরকারের অংশ নন। বিরোধীদের প্রশ্ন, তাহলে সিবিআইয়ের তত্‍পরতা বাড়বে না কমবে, তার ভবিষ্যদ্বাণী বিজেপির নেতারা কী করে করতে পারেন? তার মানে কি বিজেপির কথাতেই সিবিআই কাজ করে? 


সিপিএমের  কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, অনুপম হাজরা ও নাড্ডা সরকারের কে? কী করে এসব বলছে? সিবিআই কী করবে, ইডি কী করবে, সেটা কি ওরা ঠিক করবে?
  
একদা তৃণমূলে ছিলেন অনুপম হাজর! এখন তিনি বিজেপিতে। এই পরিস্থিতিতে অনুপমের সোশাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে তাচ্ছিল্যের সুর তৃণমূলের গলায়!


তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এসব নেতার কোনও দাম আছে? আজ টিএমসি থেকে বিজেপি, কাল আবার টিএমসিতে চলে আসবে। এদের কোনও গুরুত্ব নেই, রাজ্য রাজনীতিতে। 


সিবিআই তদন্ত নিয়ে অনুপম হাজরার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হতে, এর থেকে দূরত্ব তৈরি করেছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ওনার সঙ্গে কথা হয়েছে উনি বলতে পারবেন। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি শাসকের অঙ্গুলিহেলনে কাজ করে কি না, এই বিতর্ক আরও একবার জোরাল হল।