সন্দীপ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের ছাড়া ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভবই হত না। অথচ তাঁরাই কিনা পাচ্ছেন না সার্টিফিকেট। অভিযোগ, টিকার দুটি ডোজ নিলেও, মেলেনি শংসাপত্র। প্রায় ৬ মাস হয়ে গেলেও, এখনও নামই ওঠেনি কোউইন অ্যাপে। ফলে ট্রেন বা বিমানে ভ্রমণ, পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট দেখাতে না পারায় সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের। কর্মক্ষেত্রও শিকার হতে হচ্ছে হয়রানির।


আনোয়ার শাহ রোডের বাসিন্দা সপ্তর্ষি বসু। বেসরকারি ব্যাঙ্কে কর্মরত। নাইসেডে কোভ্যাকসিনের ট্রায়ালে ৫ ডিসেম্বর প্রথম ডোজ ও ২ জানুয়ারি দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন। এখনও সার্টিফিকেট পাননি। আবার পিয়ারলেস হাসপাতালে স্পুটনিকের ট্রায়ালে অংশ নেন সোনারপুরের বাসিন্দা কল্যাণ দে। তাঁরও একই পরিস্থিতি। স্পুটনিক পিয়ারলেস হাসপাতালে অংশ নেন সোনারপুর রাজপুরের বাসিন্দা কল্যাণ দে ও তার পরিবার। পিয়ারলেস হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর শুভ্র্যজ্যোতি ভৌমিক বলেন, ‘আমরা রেড্ডিকে জানিয়েছিলাম। আমাদের বলেছে দিতে। কিন্তু কেন্দ্রের কো উইনে কীভাবে নাম উঠবে জানি না। সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’


দেশে এখনও পর্যন্ত, কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড, স্পুটনিক ভি, জাইকোভ ডি ও কোভোভ্যাক্স -এই ৫ টিকার ট্রায়াল হয়েছে। মোট স্বেচ্ছাসেবক প্রায় ৬০ হাজার। তারমধ্যে, কলকাতা থেকে ট্রায়ালে অংশ নেন অন্তত ১২০০ জন।


কলকাতায় তিনটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে। এরমধ্যে নাইসেডে নাইসেডে প্রায় ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর চলে কোভাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। পিয়ারলেসে স্পুটনিক ভি-র ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ৫০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।


ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ২০ জনের ওপর হয়েছে কোভোভ্যাক্সের ট্রায়াল। চলতি বছরের গোড়ায়, টিকাকরণের ট্রায়াল শেষ হয়ে যায়। ৬ মাস পরেও নাম নেই কো উইনে। নাইসেডের প্যাডে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।


কলকাতা পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এটায় কোনও সমস্যা হবে না। আমাকেও দিয়েছে। নাইসেড থেকে। আমি ইলেকশনের সময় গিয়েছিলাম, তখন কমিশন মান্যতা দিয়েছে। আমার কোনও সমস্যা হয়নি।’


 নাইসেড সূত্রে খবর, যাঁরা ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের নাম আধারকার্ড ও ফোন নম্বর পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকে।