কলকাতা: ভ্যাকসিন-প্রতারণাকাণ্ডে একদিকে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন দেবাঞ্জন দেবের গাড়িচালক। অন্যদিকে, ভুয়ো আইএএস-এর বদমেজাজির বিষয়টিও খোলসা করলেন তাঁর ভুয়ো সংস্থার কর্মী। 


দেবাঞ্জন দেবের গাড়িচালক মিঠুন দেবনাথের দাবি, ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ চলত দেবাঞ্জনের কসবার অফিসে। এনিয়ে কথা বলতেন দেবাঞ্জন ও তাঁর সহযোগী শান্তনু মান্না।


পাশাপাশি, গাড়িচালকের দাবি, সব কাজেই গোপনীয়তা বজায় রাখতেন দেবাঞ্জন। চালকের কারও সঙ্গে কথা বলা ছিল তাঁর না-পসন্দ। 


এমনকি, কথা বললে ধাপায় বদলি করে দেবেন বলেও দেবাঞ্জন হুমকি দিতেন বলে দাবি ওই গাড়িচালকের। তিনি জানিয়েছেন, দেবাঞ্জন ছাড়াও কেএমসি লেখা গাড়িতে যাতায়াত করতেন তাঁর বান্ধবী ও শান্তনু মান্না। 


অন্যদিকে, প্রতারকের পাশাপাশি রীতিমতো বদমেজাজি ছিলেন দেবাঞ্জন দেব বলে দাবি করেছেন সংস্থার কর্মী শুভাশিস দাস। তিনি জানান, গতবছর ডায়মন্ড হারবারে একটি অনুষ্ঠানে ড্রেসকোড ঠিকঠাক না মানায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন দেবাঞ্জন। 


ভয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি বলেও জানান ওই কর্মী। আমফানের সময় তাঁরা কাজ করেছিলেন বলে দাবি করেন দেবাঞ্জনের সংস্থার ওই কর্মী। 


এদিকে, পরিচিতদেরও প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছিলেন দেবাঞ্জন দেব বলে জানিয়েছেন ভুয়ো আইএএস-এর বোনের স্কুলের বন্ধু।  


স্নেহা সরকার নামে ওই তরুণীর দাবি, বন্ধুর দাদা দেবাঞ্জন কলকাতা পুরসভার জয়েন্ট কমিশনার। তাই বিশ্বাস করেই ভুয়ো ক্যাম্প থেকে সপরিবারে ভ্যাকসিন নেন ওই তরুণী ও অন্য বন্ধুরা। এমনকী, ভ্যাকসিন নেন তাঁদের বাবা-মা সহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও। 


এখন দেবাঞ্জনের প্রতারণা-কীর্তির পর্দাফাঁস হওয়ার পর হতবাক সকলে। তিনি বললেন, আমি তো এটাও বুঝতে পারছি না, আমার শরীরে কী দিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, একজন মানুষ জেনেশুনে কী করে করতে পারেন? 


ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের পাণ্ডা দেবাঞ্জন দেবকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। শনিবার পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁর তিন সহযোগী -- সুশান্ত দাস, রবীন শিকদার এবং শান্তনু মান্নাকে। দেবাঞ্জন-সহ ৪ জনকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত।