সন্দীপ সরকার, কলকাতা: এসএসকেএমে জটিল অস্ত্রোপচারে বাঁচল শিশুর প্রাণ। খেলতে গিয়ে আড়াই ইঞ্চির পেরেক গিলে ফেলে শিশু। শিশুর শ্বাসনালীতে আটকে যায় আড়াই ইঞ্চির পেরেক। দুই সরকারি হাসপাতাল ঘুরে রায়গঞ্জ থেকে এসএসকেএমে পরিবার। এক ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচল শিশুর। বের করা হল পেরেক। 


বয়স মাত্র আড়াই। হাতের সামনে যা মেলে তাই নিয়ে খেলা। আর খেলতে খেলতে নিজের অজান্তেই বিপদ ডেকে এনেছিল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ইটাহারের এই একরত্তি। বছর আড়াইয়ের শিশুর শ্বাসনালীতে আড়াই ইঞ্চির পেরেক। দুই সরকারি হাসপাতাল ঘুরে এসএসকেএমের চিকিৎসকদের তৎপরতায় বাঁচল প্রাণ।


কীভাবে পেরেকটা ঢুকল? হাতে পেরেক নিয়ে কী করছিল ওই শিশু? শিশুর পরিবার সূত্রে খবর,  শনিবার সকালে বাড়ির সামনে বেড়া দেওয়ার কাজ চলছিল। সেসময় খেলতে খেলতে পেরেক গিলে ফেলে একরত্তি। মুখ দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। শিশুর পরিবার সূত্রে খবর, প্রথমে রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এক্সরেতে দেখা যায় শ্বাসনালীতে আটকে রয়েছে পেরেক। রায়গঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিকাঠামো না থাকায় বিকেল ৪টে নাগাদ রেফার করা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজে।


সেখানেও অস্ত্রোপচারে পরিকাঠামো না থাকায় রেফার করা হয় এসএসকেএমে। রবিবার ভোরে অ্যাম্বুলেন্সে করে এসএসকেএমে পৌঁছয় শিশুর পরিবার। সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় অস্ত্রোপচার।বঙ্কোসকপি পদ্ধতিতে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচারের পর বের করে আনা হয় আড়াই ইঞ্চির পেরেক। বিপদমুক্ত হলেও আপাতত শিশুটিকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।


উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই এসএসকেএমে এক অন্তঃসত্ত্বার জটিল অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল। টিউমার অপারেশনের পর সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। বিয়ের ৫ বছর পর প্রথম সন্তান। তাও টেস্ট টিউব প্রক্রিয়ায়। তা অত্যন্ত কঠিন ছিল। প্রথমে সব ঠিক থাকলেও প্রসবের দিন যত এগিয়ে আসে, তত কঠিন সমস্যার মুখে পড়তে হয় অন্তঃসত্ত্বাকে। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হত তাঁর। এজন্য এসএসকেএমের চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয় পরিবার। কারণ খুঁজতে গিয়ে চিকিত্সএকরা দেখেন, থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের পিছনে রয়েছে একটি টিউমার। এই পরিস্থিতিতে প্রথম টিউমারটিকে বের করার কথা ভাবেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু সেই অপারেশন সহজ ছিল না। কারণ, ততদিনে, গর্ভস্থ শিশুর বয়স ২৬ সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। এই সময় অপারেশনে মা ও সন্তান দু’জনেরই জীবনের ঝুঁকি ছিল। অন্তঃসত্ত্বা যে কোনও সময় কোমায় চলে যেতে পারতেন। মাত্র ১৫ মিনিটের অস্ত্রোপচারে বের করে আনা হয় টিউমার। এরপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন অন্তঃসত্ত্বা। তবে, অপারেশন হলেও, সদ্যোজাতর জন্ম নিয়ে কিছু জটিলতা থাকে। এরপর চিকিৎসকরা ঠিক করেন, সিজার করে সদ্যোজাতকে বের করা হবে। সেইমতো দেড় ঘণ্টা ধরে বিরল অপারেশনটি হয়। সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা।