বিজেন্দ্র সিংহ, দীপক ঘোষ ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: তৃণমূলের (TMC) মুখপত্রে এবার নিশানা করা হল অধীর চৌধুরীকে (Adhir Chowdhury)। অক্ষম কংগ্রেস শিরোনাম-সহ সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, বাংলায় দলকে শূন্যে টেনে নামিয়েছেন অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। কংগ্রেসের (Congress) ব্যর্থতা ঢাকতে, তিনি তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসকে কটাক্ষ করছেন বলেও আক্রমণ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। যদিও, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এতে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।


কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন সাংসদ থেকে প্রাক্তন নেতা, প্রাক্তন বিধায়ক (MLA)। এতদিন ত্রিপুরা (Tripura) থেকে অসম (Assam), গোয়া (Goa) থেকে উত্তরপ্রদেশ (Uttarpradesh), এভাবেই তাঁদের দলে টানছিল তৃণমূল। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা তারা কংগ্রেসকে (Congress) দিল মেঘালয়ে একসঙ্গে কংগ্রেসের ১২ জন বিধায়ক যোগ দিলেন তৃণমূলে (TMC)।


আর কংগ্রেসে (Congress) বড়সড় ভাঙন ধরানোর দিনই। আরও একবার দলীয় মুখপত্রে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করল তৃণমূল। তাদের মুখপত্রের সম্পাদকীয়র শিরোনাম করা হল - অক্ষম কংগ্রেস।


লাগাতার কংগ্রেস ভাঙিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আদতে মোদির হাত শক্ত করছেন। যাতে ২০২৪-র লোকসভা ভোটে বিজেপি (BJP) বিরোধীরা একজোট না হতে পারে। আর তার পরিবর্তে, সারদা-নারদ-গরু ও কয়লা পাচারের মতো কেলেঙ্কারির মামলায় তৃণমূলের নেতাদের রেহাই দেবে ইডি-সিবিআই! 


লাগাতার এই দাবি করে চলেছেন অধীর চৌধুরী। প্রতিদিন আক্রমণ শানাচ্ছেন তিনি। এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের মুখপত্রে অধীর চৌধুরীকে পাল্টা নিশানা করা হয়েছে।


সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, দলের জাতীয় স্তরের নেতৃত্বের চাইতে অধীর চৌধুরীর জ্বালাটা যেন একটু বেশি। অধীর চৌধুরী অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছেন। সেটা হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ বাংলায় তাঁদের দলকে তিনি শূন্যে টেনে নামিয়েছেন। বিধানসভায় কংগ্রেসের নাম মুছে গিয়েছে। উপনির্বাচনে তো আরও করুণ অবস্থা। ভোট এক শতাংশের নীচে নেমেছে। জোট আর ঘোঁটে দলটাকে তুলে দেওয়ার জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। 


সম্প্রতি ত্রিপুরা, গোয়ার মতো রাজ্যে সক্রিয়তা বাড়িয়েছে তৃণমূল। তা নিয়েও তৃণমূলের মুখপত্রের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের রক্ত ঝরছে। তবু মাটি ছাড়েনি। কোথায় কংগ্রেস? গোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস বাড়ি থেকে বাড়িতে।মানুষের অভাব অভিযোগ নিয়ে রাস্তায়। কোথায় ভারতের জাতীয় কংগ্রেস?  একবার দলের নেতা এসে হাত নেড়ে গেলেই আন্দোলন শেষ? এরপর উত্তরপ্রদেশ, অসম সব জায়গায় যাবে তৃণমূল। মানুষের উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা প্রমাণ করে দিচ্ছে, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চাইছেন। কারণ, কংগ্রেস হেরেছে বিজেপির কাছে। আর বিজেপিকে হারিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। 


প্রতিবেদনের শেষে তৃণমূলের মুখপত্রে ফের অধীর চৌধুরীকে খোঁচা দিয়ে লেখা হয়েছে, সব দলই চায় নিজের শক্তি বাড়াতে। তৃণমূল কংগ্রেসও তাই করছে। এতে শূন্যয় নামা অধীর চৌধুরীদের গাত্রদাহ হলে কিছু করার নেই। কংগ্রেসের ব্যর্থতা ও অপদার্থতা ঢাকতে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ এখন অক্ষমের লজ্জা ঢাকার শেষ বস্ত্রখণ্ড বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 


তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ রাজ্য  সম্পাদক কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, তৃণমূলের মুখপত্রে তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব না দিয়ে, নিজের অবস্থানেই অনড় অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। 


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) জানিয়েছেন, ওরা তো বলবেই। এটা ভাল যে জাগো বাংলা আমাকে নিয়ে লিখছে। লিখুক। বাংলায় বিজেপিকে ৭৭ করেছে দিদির দল। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে জায়গা করে দিয়েছে তারা। দিদি যে মোদির বিরুদ্ধে এত আক্রমণ করেন, এখানে এসে তো কিছু বললেন না।


এর আগে তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রে কখনও কংগ্রেসকে তুলনা করা হয়েছে পচা ডোবার সঙ্গে। আবার কখনও দাবি করা হয়েছে, রাহুল গান্ধী নন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিকল্প মুখ। এবার ফের একবার তাদের নিশানায় কংগ্রেস এবং অধীর চৌধুরী।