অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: টানা একমাস রোজ সকাল ন'টায় বেরিয়েছেন প্রচারে, প্রায় রাত বারোটা অবধি  সেরেছেন প্রচার। ফের বিকেল ৪টেয় বেরিয়ে পড়েছেন প্রচারে। শুধু তাই নয় নির্বাচনের দিনও চেতলা থেকে খিদিরপুর, খিদিরপুর থেকে চেতলা ঘুরে বেড়িয়েছেন চরকির মতো। ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম সেনাপতি তিনি - ফিরহাদ হাকিম। 'দিদির ভরসার ববি'। শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য প্রচার বা নির্বাচনের দিন দায়িত্ব সামলানোই নয়, বুধবার ভোটের ঠিক আগের দিন যখন প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা, তখন রাত দুটো অবধি খিদিরপুরে দাঁড়িয়ে জল নামানোর কাজের তদারকি ও করেছেন তিনি।


যে চেতলা আর খিদিরপুরের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফিরহাদ, সেই খিদিরপুরের ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিড পেয়েছেন ২১ হাজারের বেশি ভোটে ... ভবানীপুরের ওয়ার্ড গুলির মধ্যে যা সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফিরহাদের নিজের ওয়ার্ড  ৮২ নম্বর ওয়ার্ড সেখান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেছেন ১২হাজারের বেশি ভোটে। তবে এই উপনির্বাচনে তৃণমূলের মাথাব্যথার কারণ ছিল দুটো ওয়ার্ড ৭০ এবং ৭২, যথাক্রমে ভবানীপুর এবং আলিপুর। লোকসভাই হোক বা বিধানসভা নির্বাচন, দুই ক্ষেত্রেই এই দুটি ওয়ার্ডে বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল । ৭৪ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ আলিপুরেরও দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফিরহাদ। চুয়াত্তরের জয়ের মুখ দেখেছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিড নিয়েছেন প্রায়  সারে  চার হাজারেরও বেশি ভোটে।


ফিরহাদ একা নন মমতার জন্য পথে নেমেছিলেন পুরো হাকিম পরিবারই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবক ছিলেন ফিরহাদ হাকিমের স্ত্রী  ইসমাত হাকিম। ফিরহাদ এর দুই মেয়ে প্রিয়দর্শিনী আর সাব্বাও ময়দানে নেমেছিলেন। শাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাইস্কুলে গণনার দিন তৃণমূলের অন্যতম এজেন্ট ছিলেন ফিরহাদকন্যা সাব্বা  হাকিম। আর গণনার দিন ফিরহাদ সারাদিনই নজর রেখেছিলেন টিভির পর্দায়।


২০১১ উপনির্বাচনের ফল ছাপিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপুল মার্জিনের জয় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে গিয়েছিলেন 'দিদি' অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও। গুরুদায়িত্ব সামলাতে পেরে অনেকটাই হালকা হয়েছেন। ভোট প্রচারের ব্যস্ততায় পুজো নিয়ে প্রতি বছর ব্যস্ত থাকা ফিরহাদ চেতলা অগ্রণীর পুজোর দিকে  তেমন নজর রাখতে পারেননি। সোমবার থেকে তাই ফের পুজোর টক্করে নেবে পড়ছেন ববি।