কলকাতা: আজ মহানবমী। হিন্দু শাস্ত্রমতে মহা নবমী বা দুর্গা নবমী হল আসুরিক শক্তি বধে বিজয়ের দিন। শ্রী শ্রী চণ্ডী থেকে জানা যায়, দুর্গা রুদ্ররূপ (মা কালী) ধারণ করে মহিষাসুর এবং তাঁর তিন যোদ্ধা চণ্ড, মুণ্ড এবং রক্তবিজকে বধ করেন। নবমীর বিশেষত্ব যদি কিছু থাকে তা হল হোম-যজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্যে। নবমীতেই মূলত হোম হয়ে থাকে, ব্যতিক্রমী নিয়মও থাকতে পারে। মূলত আঠাশটা বা একশো আটটা নিখুঁত বেলপাতা লাগে। 


সেই প্রথা মেনেই বেলুড় মঠে শুরু হয়েছে মহানবমীর বিশেষ পুজো। রীতি মেনে চলছে হোমযজ্ঞ। করোনা আবহে এবার ভক্তশূন্য বেলুড়। মঠের মধ্যেই চলছে মা দুর্গার আরাধনা। পুজোর আগেই বেলুড় মঠের নবমী পুজোর নির্ঘণ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২৭ আশ্বিন (১৪ অক্টোবর) | মহানবমী | পূজারম্ভ সকাল ৫.৪০মিঃ হোম | দেবীর ভোগারতির পর। 


আরও পড়ুন, মহানবমীতেই দুর্গারূপে অসুর বিজয় করেছিলেন দেবী, আজকের দিনের গুরুত্ব কতটা?



পাশাপাশি, কলকাতার বনেদি বাড়িগুলির অন্যতম শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। সেখানেও নবমীর বিশেষ পুজো শুরু হয়েছে। প্রথা মেনে নবমীতে হোম, বলি, আরতি, বিশেষ পুজো শুরু হয়েছে। শোভাবাজার রাজবাড়িতে অন্নভোগের প্রচলন নেই। তার পরিবর্তে চাল, কলা, দুধ, মিষ্টি আর সন্দেশ দিয়ে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। বলি দেওয়া হয় আখ, চালকুমড়ো, মাগুর মাছ। বলির পর আরতি। এরপর অঞ্জলি। বিকেলে মিছরি, জল ও মাখন দিয়ে দেবীকে শীতল ভোগ। রাতে শুকনো মিষ্টি সহযোগে মিঠাই ভোগের আয়োজন। 


এরই মাঝে বাঙালির প্রাণের উৎসবে বিষাদের সুর। কাতর প্রার্থনা, না পোহায় যেন নবমী নিশি৷ করোনা-উদ্বেগকে পিছনে ফেলে এবার মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় করেছে মানুষ। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে চলেছে দল বেঁধে ঠাকুর দেখা। এরই মাঝে প্রতিবারের মতো মাকে আরও কিছুদিন রেখে দেওয়ার বাসনা নিয়েই বিসর্জনের প্রহর গোনা শুরু। 


আরও পড়ুন, অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে শিয়ালদা শাখায় বাতিল নবমী-দশমীর ৭ জোড়া স্পেশাল নাইট ট্রেন


এদিকে, নবমীর সকাল থেকে আকাশে মেঘ-রোদের লুকোচুরি। আজ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে। ইতিমধ্যেই কোনও কোনও জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা মাথায়, রেনকোট চাপিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েছেন অনেকেই। বাংলা থেকে বর্ষা বিদায় নিলেও, উত্তর আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্তের ফলে চোখ রাঙাচ্ছে নিম্নচাপ। 


তার জেরে আজ ও কাল দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। আজ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি বেশি হবে। কাল দশমীতে দিনভর মেঘলা আকাশ, দফায় দফায় বৃষ্টির সম্ভাবনা। শনিবার থেকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। রবিবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস। ভারী বৃষ্টির সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা।