কলকাতা: স্নাতকস্তরে পড়াকালীনই প্রতারণায় হাত পাকানো শুরু ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেবের।
বিএসসি পড়ার সময় প্র্যাক্টিক্যালের গৃহশিক্ষককে প্রতারণার জালে ফাঁসিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন দেবাঞ্জন। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওই শিক্ষকের।
সোনারপুরের বাসিন্দা গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে কর্মরত ওই শিক্ষকের কাজের পাশাপাশি অভিনয়ের আগ্রহ ছিল। অভিযোগ, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সিনেমায় অভিনয়ের টোপ দিয়ে শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন দেবাঞ্জন।
সোনারপুরে শিক্ষকের বাড়ি পড়তে আসতেন দেবাঞ্জন। জুলজির প্র্যাকটিকাল ক্লাস করতে। তিনি বলেন, পড়ুয়া হিসেবে ভাল ছিল। ২০১৩ সালে জয়েন করে।
শিক্ষক বলেন, টলিউডের আইডি-কার্ড বানিয়ে দেওয়ার নাম করে আমার থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছিল দেবাঞ্জন। শিক্ষকের দাবি, আইডি কার্ড আসেনি। অভিনয়ের সুযোগও পাইনি।
গুণধর ছাত্র এভাবে আরও কয়েকজনকে প্রতারণা করেছেন বলে শিক্ষকের দাবি। বললেন, আরও ২ জন স্টাফের থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা নিয়েছিল।
দেবাঞ্জনের বর্তমান কীর্তিকলাপ দেখে আশ্চর্য হয়ে গেছেন শিক্ষক। বললেন, এতটা ফেরোশাস! কলকাতার বুকে, এত নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা করা। পুরসভাকে ঠকিয়ে যা করেছে তা ভাবা যায় না।
ইতিমধ্যেই ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে কসবা থানায় একাধিক প্রতারণার অভিযোগ হয়েছে। ৯০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ট্যাংরার এক ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীর দাবি, বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে, কলকাতা পুরসভার ভুয়ো প্যাড, হলোগ্রাম, সিলমোহর ব্যবহার করা হয়েছিল।
সুরজিৎ সাউ নামে ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার জন্য মাস্ক এবং অক্সিমিটার সরবরাহ করার টেন্ডার ভরতে বলেন। সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট দিতে বলেন। কমিউনিটি হল তৈরি হবে, সেই টেন্ডার ভরার কথাও বলেন। দ্বিতীয় টেন্ডার-এর জন্য সিকিউরিটি ডিপোজিট বাবদ আরও ৩৬ লক্ষ টাকা জমা দেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
ট্যাংরার আরেক ওষুধ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকেও প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন দেবাঞ্জন। তিনি বলেন, উনি টেন্ডার বের করতেন। যেমন কর্পোরেশনে হয় সেরকম। স্যানিটাইজার, মাস্ক থেকে শুরু করে ওষুধ নিয়েছে। কোভিডের জন্য যে সব ওষুধ সেসব বাবদ এখনও ২৬ লক্ষ টাকা পাই।
পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্যানিটাইজার বিলির জন্য ৪ লক্ষ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা।