কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে দেবাঞ্জন দেবের আরও এক সহযোগী গ্রেফতার। ধৃতের নাম ইন্দ্রজিত্ সাউ। ট্যাংরার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি দেবাঞ্জনের সংস্থায় কাজ করতেন।
পুলিশের দাবি, সিটি কলেজে ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজক ছিলেন ইন্দ্রজিত্। তিনিই দেবাঞ্জনকে সিটি কলেজের ক্যাম্পে নিয়ে যান।
গতকাল সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনের কাছে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে দেবাঞ্জনের ওই সহযোগীকে গ্রেফতার করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ।
আর কোথায় দেবাঞ্জন ভুয়ো ক্যাম্পের আয়োজন করেছিলেন, ইন্দ্রজিৎকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা চলছে।
দেবাঞ্জন দেবের কীর্তি নিয়ে তদন্ত যতই এগোচ্ছে ততই বেরিয়ে আসছে নতুন নতুন তথ্য। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, দেবাঞ্জনের ভুয়ো ভ্যাকসিন ক্যাম্পে সম্ভবত দেওয়া হয়েছে আরও একটি ইঞ্জেকশন।
তল্লাশির সময় ২ ধরনে ভায়াল উদ্ধার হয়েছে। সবুজ ঢাকনাওয়ালা ভায়ালের গায়ে কোভিশিল্ড স্টিকার লাগানো ছিল। সেই স্টিকারের নীচে ছিল অ্যামিকাসিনের স্টিকার।
পাশাপাশি, লাল রঙের ঢাকনাযুক্ত ভায়ালে লাগানো ছিল স্পুটনিক ভি-র স্টিকার। তার নীচে ছিল ট্রায়ামসিনোলোন অ্যাসিটোনাইড বা ন্যাডিকোর্ট ইঞ্জেকশনের স্টিকার। তবে এই ভায়ালগুলির মধ্যে কী ধরণের তরল ছিল, তা ঘটনাস্থলে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এখনও ফরেন্সিক রীক্ষার রিপোর্ট আসেনি। চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ইঞ্জেকশন হল অ্যামিকাসিন। স্টেরয়েড হিসেবে ব্যবহার করা হয় ন্যাডিকোর্ট ইঞ্জেকশন।
আর এই সম্ভাবনা নিয়ে আশঙ্কিত চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, যদি সুস্থ শরীরে এই ধরনের ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা হয় তাহলে দেখা দিতে পারে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
আগে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছিল, কোভিশিল্ডের স্টিকারের নীচে ছিল অ্যামিকাসিনের স্টিকার। ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর কলকাতা হাইকোর্টে ৩টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা দাবি করে আদালত।
গত ২৪ জুন ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের কসবার ভুয়ো অফিস থেকে ১২০টি ভায়াল উদ্ধার করা হয়। যার ওপরে লেখা ছিল কোভিশিল্ড। সেই লেবেল তুলতেই বেরিয়ে আসে অ্যামিকাসিন সালফেট ইঞ্জেকশনের স্টিকার।
পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়ার দিনই দেবাঞ্জন দাবি করেন, তিনি মেহেতা মার্কেট থেকে ভায়ালগুলি কিনেছিলেন। রাজ্য সরকারের সেই হলফনায় জানা গেল, স্পুটনিকের স্টিকারের নীচে ছিল অন্য একটি ইঞ্জেকশনের স্টিকার।