সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : সাড়ে তিনশরও বেশি দিন ধরে SSC-র আন্দোলনে বীরভূমের নলহাটির সোমা দাস। তিনি ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত। চাকরির জন্য দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বীরভূমের সোমা। কর্কটরোগের কামড় সত্ত্বেও কোনও বিশেষ সুবিধে নিতে চাননি তিনি। এসএসসি নিয়োগদুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় আন্দোলনরত যোগ্য প্রার্থীদের জন্য় লড়়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমে ছবি দেখে সোমা দাসকে ডেকে পাঠান বিচারপতি । তিনি এও বলেন, প্রয়োজনে তিনি অন্যত্র চাকরির বন্দোবস্তও করে দেবেন সোমাকে। তবে মানা করে দেন সোমা, তিনি বলেন ‘শিক্ষক হওয়াটাই স্বপ্ন, জীবনের সঙ্গে লড়ছি, এটাও লড়ব’। সোমা জানিয়ে দেন, তাঁর একার নিয়োগের দরকার নেই। তাঁর সঙ্গে এত দিন ধরে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের সকলেরই চাকরি পাওয়া দরকার।
চাকরি না পেলে কীভাবে চিকিৎসা হবে সোমার ?
সোমবার এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিবকে সোমা দাসের বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানান। বলেন, ‘আন্দোলনকারী ক্যান্সার আক্রান্তকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ করা যায় কি না। ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাসকে কি সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ করা যায় ?’ প্রয়োজনে রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি বলেন, চিকিৎসার জন্য সোমা দাসের ১৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। চাকরি না পেলে কীভাবে চিকিৎসা হবে সোমার ?
৭ দিনের মধ্যে সোমা দাসের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ করেন বিচারপতি। প্রয়োজনে চিকিৎসা সংক্রান্ত সব নথি খতিয়ে দেখবে স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিব । সেই সঙ্গে ২ সপ্তাহের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ও স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিবের হলফনামা তলব করে আদালত। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘মেধাতালিকায় নিচের দিকে থাকা ব্যক্তিরা চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ কতটা ঠিক, খতিয়ে দেখে উত্তর দেবে ২ কর্তৃপক্ষ ' ।
কে এই সোমা ?
২০১৯ সালে ক্যান্সার ধরা পড়ে সোমার। কিন্তু সঙ্গতি নেই চিকিরসার বিরাট খরচ বহন করার। তার মধ্যেই কষ্ট করে চলে চিকিৎসা। এই পরিস্থিতিতেই কিছুটা সুস্থ হয়ে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিতে কলকাতা চলে আসেন সোমা। ক্যানসারের যন্ত্রণা ঢেকেই আন্দোলন শুরু করেন। সোমা এখনও জের গলায় বলেন, শরীর যদি সঙ্গ দেয়, আন্দোলন চলবে ন্যায়ের জন্য ।