হিন্দোল দে, কলকাতা : বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যেন খবরটা। বারবার ডুকরে উঠে সুপর্ণা শূর শুধু বলে উঠছিলেন 'ভাইকে আর ভাইফোঁটা দেওয়া হল না।' হাসপাতালে ভর্তি জ্যাঠাকে দেখতে সকালে স্কুটার নিয়ে বেরিয়েছিলেন নরেন্দ্রপুরের বাসিন্দা শুভজিত শূর। ফিরে এসে ভাইফোঁটা নেওয়ার কথা ছিল দিদির কাছে। কিন্তু ফোঁটা আর নেওয়া হল না। বাঘাযতীন উড়ালপুলে বেসরকারি বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ২৫ বছরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের। পরে বাসের কন্ডাক্টরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঘরে ভাইফোঁটা দেবেন বলে তখন অপেক্ষায় ছিলেন দিদি। কিন্তু ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদে আনন্দ নিভে গেল এক নিমেষে। ভাইফোঁটার দিন শহরে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মৃত্যু সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শুভজিতের শূরের। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ বাঘাযতীন উড়ালপুলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। গড়িয়া স্টেশন থেকে বাগবাজারগামী একটি বেসরকারি বাস উড়ালপুল থেকে নামার সময় শুভজিতের স্কুটারে ধাক্কা মারে।শুভজিৎ রাস্তায় পড়ে যান। তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায় বাস। তাঁকে পূর্ব যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশ পিয়ারলেস হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তবে আরও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে পারত এদিন। বাসযাত্রীদের দাবি, শুভজিৎ-কে ধাক্কা মারার পরে, চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়ে পালান চালক ও কন্ডাক্টর। সেই সময় বাসে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৫০ জন যাত্রী। এক যাত্রী কোনওক্রমে ব্রেক কষে বাস থামান। পরে ঘাতক বাসের কন্ডাক্টরকে গ্রেফতার করেছে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ।
এদিকে, ভাইফোঁটার বিকেলে চিংড়িঘাটা মোড়ে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। বেপরোয়া গতির বলি হয়েছেন একজন, আহত ৬ জন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে পৌনে চারটে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাস্তা পার হওয়ার জন্য জেব্রা ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন পথচারীরা। সেই সময়ই দ্রুতগতিতে এসে এক গাড়ি সজোরে ধাক্কা মারে তাঁদের। সায়েন্স সিটি থেকে উল্টোডাঙার দিকে যাচ্ছিল গাড়িটি। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে একজনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জানা যাচ্ছে, মৃত পথচারীর বয়স চল্লিশের আশপাশে। তবে তাঁর পরিচয় এখনও জানা যায়নি। বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ গাড়ির চালককে আটক করেছে।
আরও পড়ুন- চিংড়িঘাটা মোড়ে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু পথচারীর, আহত ৬