ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: এইচআইভি আক্রান্ত এক মা। আক্রান্ত হয়েছিলেন জন্ডিসে। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল খাওয়াদাওয়া। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও মিলছিল না সুরাহা। শেষ পর্যন্ত স্বস্তি দিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। করোনা আবহের মধ্যে বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে ৬ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার করে রোগিণীর টিউমার বাদ দিলেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভাল আছেন মহিলা।
একে এইচআইভি আক্রান্ত। তার সঙ্গে আবার জন্ডিস। জীবনের আলো যেন দ্রুত নিভে আসছিল কলকাতা লাগোয়া শহরতলির এক মহিলার। প্যাকেজে কোথাও রোগীর নাম বলা যাবে না। রোগী ও রোগীর পরিজন দুজনেরই মুখ ব্লার। চলে গিয়েছিল খাওয়া-দাওয়ার ক্ষমতা। তার জেরে আরও খারাপ হচ্ছিল শারীরিক পরিস্থিতি। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরেও সুরাহা মিলছিল না। রোগিণীর পরিজন বলেন, 'সবাই বলছিল, আর কিছু করার নেই। বাড়ি নিয়ে চলে যান। বাকি কটা দিন ভাল করে খাইয়ে দাইয়ে রাখুন।'
শেষ পর্যন্ত, আশার আলো দেখাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সার্জারি বিভাগের আউটডোরে এইচআইভি আক্রান্ত মাকে দেখাতে নিয়ে যায় ছেলে। চিকিৎসায় ধরা পড়ে, মহিলার অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালি ও পিত্তথলি, এই তিনের মধ্যবর্তী এলাকায় বড় টিউমার রয়েছে। সেকারণেই অবস্ট্রাক্টটিভ জন্ডিসে ভুগছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
একে করোনা আবহ। তার ওপর আবার রোগিণী এইচআইভি আক্রান্ত। একটু ভুলে ঘটে যেতে পারে বড় বিপদ। একাধিক চ্যালেঞ্জ সামলে চার চিকিৎসক ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় রোগিণীর টিউমার বাদ দেন। চিকিৎসক সুমন সাহা বলেন, 'অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালি ও পিত্তথলি এই তিনের মধ্যবর্তী এলাকায় টিউমার। অবস্ট্রাক্টটিভ জন্ডিস। আরো ৩টে জায়গা বাদ দিতে হয়েছে। নইলে টিউমার বড় হয়ে যেত।'
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভাল আছেন ওই মহিলা। অপারেশনে টিউমার বাদ, যাতে ভবিষ্যতে না বাড়ে। আরও ৩টি জায়গা বাদ দিতে হয়েছে। ভাল আছেন। খুব শিগগিরই ছুটি দেওয়া যাবে। মাকে কবে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবে, এখন সেই অপেক্ষায় সময় কাটছে ছেলের।