সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ম্যালেরিয়ায় কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আর আসছে না। বরং দেখা যাচ্ছে জ্বরহীন ম্যালেরিয়া। ফলে রোগ নির্ণয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে চিকিত্সকদের। কলকাতায় গত দু’সপ্তাহে চার শিশু সহ ১০ জন এই জ্বরহীন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। কোভিড প্রকোপের মধ্যেই এই জ্বরহীন ম্যালেরিয়া উদ্বেগ বাড়িয়েছে চিকিত্সকদের।
করোনা ভাইরাস প্রতিনিয়ত চরিত্র বদল করে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। এবার ম্যালেরিয়ার প্যারাসাইটও চরিত্র বদল করে চিন্তায় ফেলে দিল চিকিত্সকদের। ম্যালেরিয়া হচ্ছে। কিন্তু কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে না। বরং দেখা যাচ্ছে জ্বরহীন ম্যালেরিয়া। ফলে রোগ ধরতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে চিকিত্সকদের। সূত্রের খবর, কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে গত দু’সপ্তাহে জ্বরহীন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে চার শিশুও রয়েছে।
চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, শিশুদের ক্ষেত্রে উপসর্গ হল, জ্বর না থাকা। ডায়েরিয়া, সর্দি কাশি। মুশকিল হল, জ্বর না থাকায় প্রথমে চিকিত্সকরা ডায়েরিয়ার ওষুধ দেন। তারপর ওষুধ দেওয়া হয় সর্দি কাশির। কিন্তু তাতেও সুস্থ না হওয়ায় কোভিড, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা করা হয়। তখনই ধরা পড়ে প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স ম্যালেরিয়ায় কাবু প্রত্যেকে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শান্তনু রায় বলছেন, 'আমরা চরিত্র ধরতে পারছি না। না পারার ফলে ভয় বাড়ছে। দেরি হলে কী সমস্যা হতে পারে বলছে। বেলভিউয়ে গত ১৫ দিনে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত যে রোগীরা ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২ জনকে দিতে হয়েছে ভেন্টিলেশনে।' চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, জ্বর না থাকা।
শ্বাসকষ্ট। খিঁচুনি। শরীরে দুর্বল ভাব। খাওয়া দাওয়ার ইচ্ছে চলে যাওয়ার মতো উপসর্গ।
চিকিত্সক রাহুল জৈনের কথায়, ম্যালেরিয়া কেমন হয়। এই ম্যালেরিয়ার সঙ্গে অন্য ম্যালেরিয়ার তফাত রয়েছে। সূত্রের খবর, এই রোগীদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই চিকিত্সকরা প্রথমে কোভিড সন্দেহ করেছিলেন। কিন্তু দেখা যায় কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ। অথচ সংক্রমণ ছড়িয়েছে ফুসফুসে। এক রোগীর কিডনির সমস্যাও দেখা দেয়। ম্যালেরিয়ার প্যারাসাইট চরিত্র বদলেছে বলেই এই সব জটিলতা দেখা যাচ্ছে। জ্বরহীন ম্যালেরিয়া তাই উদ্বেগ বাড়িয়েছে চিকিত্সকদের।