কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে যখন একের পর এক অমানবিক ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে শহর, সেই সময় অঙ্গদানের নজির। পূর্ব মেদিনীপুরের সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সক অমিয়ভূষণ সরকারের ব্রেন ডেথের পর তাঁর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। গত ২২ এপ্রিল একটি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন এই চিকিত্সক। ভর্তি ছিলেন অ্যাপোলো হাসপাতালে। গতকাল, সোমবার তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা।
এরপর মৃতের স্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী অঙ্গদান করা হচ্ছে। করোনার সেকেন্ড ওয়েভের ধাক্কার পর এটাই শহরে প্রথম অঙ্গদান। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃতের হৃদযন্ত্র পাঠানো হচ্ছে হাওড়ার নারায়ণা হাসপাতালে। একটি কিডনি যাচ্ছে আর এন টেগোর হাসপাতালে। আরেকটি কিডনি পাঠানো হবে আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালে। লিভার যাচ্ছে গুরুগ্রামে। এছাড়া তাঁর কর্নিয়া ও ত্বকও সংরক্ষণ করা হবে ৷
করোনার জেরে বিপর্যস্ত এখন গোটা দেশ। বেড অক্সিজেনের সমস্যায় বেসামাল হাসপাতালগুলি। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছে একাধিক হাসপাতালগুলি। হাসপাতালে বেডের অমিল ৷ প্রচুর সংখ্যায় রোগীর ভিড় ৷ ঠিক যেন গতবছরের ভয়াবহ ছবিটাই ফিরে এসেছে ৷ এত বেশি সংখ্যক রোগীর জন্য হাসপাতালে সীমিত পরিষেবা যথাযথ নয়। কিন্তু এই কঠিন সময়েই সম্ভব হল মরণোত্তর অঙ্গদান। করোনা আবহেও শহর কলকাতায় সফল ভাবেই হল অঙ্গদানের প্রক্রিয়া।
এর আগে গত মাসে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা বছর ২১-এর বাসুদেব অধিকারীকে চিকিৎসকরা ব্রেন ডেথ ঘোষণার পরে তাঁর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন তরুণের পরিবার ৷ কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর ৷ অঙ্গদানের জন্য তরুণের পরিবার রাজি হওয়ার পরেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে যোগাযোগ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরেই রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের তরফে একটি বিশেষজ্ঞ দল সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে যান। ওই তরুণের হৃদয় প্রতিস্থাপন কয়েছে ১৩ বছরের এক কিশোরের দেহে। হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই হৃদয় প্রতিস্থাপন করা হয় ৷