ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: করোনা-বিধি উড়িয়ে মধ্যরাতে পার্কস্ট্রিটের পাঁচতারা হোটেলে পার্টিতে থাকা ফ্লোর ম্যানেজারকে তলব করল লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। ওই পার্টিতে থাকা ডিজে, খাদ্য-পানীয়ের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজারকেও তলব করা হয়েছে। বেআইনি পার্টির আয়োজক এজেন্টদেরও চিহ্নিত করল লালবাজার। 


পার্ক হোটেলকাণ্ডের তদন্তে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে দাবি, শুধু একদিন নয়, কার্যত লকডাউনের মধ্যে প্রায়ই উইক এন্ড পার্টি হয়েছে এই পাঁচতারা হোটেলে। যাঁরা পার্টি করেছেন তাঁদের অনেকেই পার্ক স্ট্রিট, কড়েয়া, বেনিয়াপুকুর, ভবানীপুর, বেকবাগান, নিউআলিপুর, বউবাজার এবং রাজারহাটের বাসিন্দা। সরকারি বিধিনিষেধ না মেনে নৈশ পার্টির আয়োজনের ঘটনায় কার্যত তাজ্জব বনে গেছে পুলিশ। 


শনিবার পার্ক হোটেলে কোভিড বিধি না মেনে নৈশ পার্টি করার সময় ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন, পুলিশ কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পার্ক স্ট্রিট থানার পাশাপাশি তদন্তে নামে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখা। ঘটনার রাতের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ।


পুলিশ সূত্রে দাবি, ঘটনাস্থল থেকে মদের বোতল, সিগারেটের টুকরো, গাঁজা সহ বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। পার্টিতে কী ধরনের মাদক ব্যবহার করা হয়েছে, তারও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।


সোমবার দুপুর তিনটে থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত হোটেলে তদন্ত চালান লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার অফিসাররা। খতিয়ে দেখা হয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। ডিজে বক্সের মতো সরঞ্জাম কারা সরবরাহ করল, তাও হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।


পার্টির রাতে কতজন বোর্ডার ছিলেন। কটি রুম, কাদের নামে বুক করা হয়েছিল? তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। নোটিস দিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে বুধবার লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে।


এদিকে, পার্ক হোটেল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। রাজ্যে কর্মসংস্থান এবং আর্থিক উন্নতিতেও সংস্থার অবদান রয়েছে। অতিথি ও কর্মীদের সুরক্ষিত রাখাই হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে অগ্রাধিকার। কোভিড বিধি মেনে হোটেলের পানশালা ও রেস্তোরাঁগুলি বন্ধ। হোটেলের অনেক পৃষ্ঠপোষক ও তাঁদের পরিচিতরা পরিবার-সহ সপ্তাহান্তে নিয়মিতভাবে হোটেলে রুম বুক করে থাকেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ আইন মেনে চলছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করা হচ্ছে।