সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ভবানীপুরের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত আলিপুর মহিলা জেলে ডায়েরিয়ার প্রকোপ অব্যগত। আলিপুর মহিলা জেলে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন মহিলা ও ২টি শিশু।
এই নিয়ে আলিপুর মহিলা জেলের ১২ জন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। ২ জন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে জেলে ফিরেছেন। ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার সেখানে আক্রান্ত হন ১১ জন। বিচারাধীন বন্দির ২ শিশুসহ ৯ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ৭ জন শম্ভুনাথ পণ্ডিতে এবং ২ শিশু চিত্তরঞ্জন শিশু সদনে ভর্তি।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, হ্যালোজিন ট্যাবলেট, ৫০০ ওআরএস মহিলা সংশোধনাগারে দেওয়া হয়েছে। পাম্প করে জল তুলে ফেলা হয়েছে।
জল দূষণের আতঙ্ক ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ভবানীপুরে কলকাতা পুরসভার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের শশীশেখর বসু রোডে।
স্থানীয় সূত্রে দাবি, এখনও ডায়েরিয়ার প্রকোপ রয়েছে, ৭৩ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে। এই দুটি ওয়ার্ডের প্রায় ৫৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন ডায়েরিয়ায়।
মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। অনেকে হাসপাতালে ভর্তি। অনেকে আবার বাড়িতে থেকেই চিকিত্সা করছেন।
এখনও পুরসভার জলে দুর্গন্ধ। সেই জল ব্যবহার করছেন না বাসিন্দারা। পুরসভার জলের গাড়ি এবং কেনা জলই ভরসা তাঁদের।
আজও সেখানে জায়গায় জায়গায় রাস্তা খুঁড়ে পানীয় জলের পাইপলাইনে লিক খোঁজার কাজ চালাচ্ছে পুরসভা।
আরও পড়ুন:
পুরসভার দূষিত জল খেয়ে ভবানীপুর, আলিপুর মহিলা জেলে ২ জনের 'মৃত্যু'
৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার কর্মী আবাসনের ৬ টি রিজার্ভার পাম্প কের জল ফেলে দেওয়া হয় নিকাশী নালা পরিস্কার করা হচ্ছে, পুরসভার কলের জল পান করতে বারণ করা হয়েছে, এখন পুরসভার জলের গাড়ি সঙ্কট মেটাচ্ছে।
গতকাল এলাকা থেকে পানীয় জলের যে নমুনা নেওয়া হয়েছিল, আজ তাঁর রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা।
এর আগে, সোমবার রাত ৮টা নাগাদ চিত্তরঞ্জন শিশু সদন হাসপাতালে মৃত্যু হয় বছর চারেকের এক শিশুর।
পরিবারের অভিযোগ, ১২ তারিখ শিবরাত্রির প্রসাদ খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। যে প্রসাদ তৈরিতে পুরসভার কলের জলই ব্যবহার করা হয়েছিল।
১৩ তারিখ অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিত্তরঞ্জন শিশু সদনে ভর্তি করা হয়। আইসিইউতে রেখে চলছিল চিকিৎসা।
ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যাটা নয় নয় করে ৫০ ছুঁয়েছে। শম্ভুনাথ পণ্ডিত, ন্যাশানাল মেডিক্যাল থেকে শহরের নানা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা।
দূষিত জল খেয়ে এখনও পর্যন্ত দু’জন প্রাপ্ত বয়স্কের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু, তা নিয়ে অদ্ভূত ও চাঞ্চল্যকর দাবি শোনা গেছে স্থানীয় বিদায়ী কাউন্সিলরের গলায়। রতন মালাকারের দাবি, মদ খাওয়ার ফলেই মৃত্যু হয়েছে। তাঁর দাবি অবশ্য মানতে নারাজ চিকিৎসকমহল।