কলকাতা: সোমবার নবান্নে মুখোমুখি সাক্ষাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার (Nitish Kumar)। সঙ্গে ছিলেন তেজস্বী যাদবও (Tejashwi Yadav)। মিনিট ৩৫ নবান্নের ১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে হল বৈঠক। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান নীতিশ কুমার ও তেজস্বী যাদবকে।
এর আগে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক করেছেন কুমারস্বামীর সঙ্গে। ওড়িশায় গিয়ে নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। এবার নীতিশ কুমার এবং তেজস্বী যাদব কলকাতা এসে দেখা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এই সবকটি দলই বর্তমান সময়ে জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপির উল্টো অক্ষে অবস্থান করছে। বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। তার আগে বিরোধী ঐক্য গড়তেই কি এই তৎপরতা? এমন প্রশ্নই বারবার উঠে আসছে রাজনৈতিক মহলে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আমি তো আগেই আপনাদের বলেছি যে এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমরা চাই বিজেপি জিরো হয়ে যাক। অনেক বড় হিরো হয়ে গেছে। কিছু না করে, শুধু মিথ্যে কথা বলে, ফেক ভিডিও বানিয়ে, ফেক কথা বলে, গুণ্ডাগিরি করে। এটা চলতে পারে না। নীতিশজি সবার সঙ্গে কথা বলবেন, আমিও বলছি। একসঙ্গে মিলে আমরা চলব।আমাদের পার্সোনাল ইগোর কোনও বিষয় নেই। একসঙ্গে কাজ করতে চাই।'
সাংবাদিক বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বলেন, 'পরবর্তী লোকসভা ভোটের আগে সবাই প্রস্তুতি নিন।সবাই নিজেদের মধ্যে বসে কথা বলুন। পরবর্তী দিশা ঠিক করুন। আগামীদিনে যা করা হবে তা দেশের স্বার্থেই। এখন যারা রাজত্ব করছেন তাঁদের এসবে কিছু যায় আসে না। তারা শুধুই প্রচার করছেন। দেশের উন্নয়নে কোনও কাজ হচ্ছে না। এরপর যখন বসব অন্যান্য সব দলকে একসঙ্গে ডেকে কথা বলব, আগামীর রূপরেখা তৈরি করব। এই কথাই হয়েছে।'
মমতার সঙ্গে বৈঠক সেরেই তড়িঘড়ি লখনউ উড়ে গেলেন নীতিশ। বৈঠকে বসবেন অখিলেশ যাদবের সঙ্গে। অনেকেই বলছেন, মমতার সঙ্গে বৈঠকের নির্যাসই অখিলেশের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন নীতিশ। এর আগে রাহুলের সঙ্গে নীতিশের এবং তেজস্বীর আলাদা করে সাক্ষাৎ হয়েছে।
বিরোধীদের কটাক্ষ:
কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী জোটে থাকবেন, আগে এই বিশ্বাসযোগ্যতাটা নিজে তৈরি করুন। মোহন ভাগবত আসলে ফুল-মিষ্টি পাঠাবেন। সংসদে ভোট হলে ওদের সাংসদরা বাদামভাজা খেতে চলে যাবে। বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা আগে প্রমাণ করুক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমপালশন অন্য। যে কোনও জায়গায় ঢুকে বিরোধী জোটকে দুর্বল করে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আছে। যে রাজনৈতিক দল বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে বদ্ধপরিকর, তারাও মনে হয় বিশ্বাস করবে না।'
সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, 'আমরা বলেছি বিজেপি বিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। কিন্তু, গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বলছে বিজেপির সরকার গড়তে তৃণমূল ময়দানে নেমে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বিরোধীদের ঐক্যকে ভেঙে বিজেপির হাতে ওই সরকার তুলে দিয়ে এসেছে। সংসদে আদানির দুর্নীতির বিরুদ্ধে যখন সব বিরোধী দল কথা বলছে। সেই মিছিলে উনি যাচ্ছেন না। আরএসএস-এর সমর্থনে তৈরি দল এই তৃণমূল। আর পর্যন্ত আরএসএস-বিরুদ্ধে একটা কথাও উনি বলেননি।'
আরও পড়ুন: নিয়োগ-দুর্নীতিতে তাঁর হাত নেই! ফের বোর্ডের ঘাড়ে দায় ঠেলে দাবি পার্থর