কলকাতা: নারদ মামলায় একসঙ্গে তৃণমূলের তিন নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করল সিবিআই। গ্রেফতার করা হল কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকেও।
সোমবার সকালে নারদ-মামলায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। নিজাম প্যালেসে তুলে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমোতে সই করানো হয় চার নেতা-মন্ত্রীকে।
সূত্রের খবর, রাজ্যপালের কাছ থেকে অনুমতি মেলার পর নারদকাণ্ডে চার অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই।
তার আগে, এদিন সকালে চারজনকে নিয়ে আসা হয় নিজাম প্যালেসে। সেখানেই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় অ্যারেস্ট মেমো।
এই চারজনের পাশাপাশি, নারদকাণ্ডে আরেক অভিযুক্ত সাসপেন্ডেড আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জার বিরুদ্ধেও আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই। খবর সূত্রের।
নারদ-মামলায় একই অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন গ্রেফতার নয় মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী? বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যই কি ছাড়? প্রশ্ন তৃণমূলের।
দলীয় সূত্রে খবর, নারদ মামলায় যখন শুরু হয়েছিল, সেই সময় ১২-১৩ জনের নাম উঠে এসেছিল। সেই তালিকায় ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের পাশাপাশি নাম ছিল মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর।
সেই সময় মুকুল ও শুভেন্দু -- দুজনই তৃণমূলে ছিলেন। পরবর্তীকালে, দুজনই বিজেপিতে যোগ দেন। এখন তৃণমূলের প্রশ্ন, গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার ফলেই কি মুকুল-শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হল না?
আজ সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। এরপর গাড়িতে করে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয় ফিরহাদ হাকিমকে।
এর পাশাপাশি, আজ সকালে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা হয় মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও।
এই গ্রেফতারি প্রক্রিয়ার আইনি গ্রহণযোগ্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, বিধায়ককে গ্রেফতার করতে হলে, বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া জরুরি।
বিধানসভার অধ্যক্ষের দাবি, এক্ষেত্রে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমাকে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, অধ্যক্ষের পদ ফাঁকা থাকলে অন্য কথা ছিল। কিন্তু, অধ্যক্ষ থাকা সত্ত্বেও কেন অনুমতি নেওয়া হল না।
তিনি যোগ করেন, চার্জশিট পেশে রাজ্যপালের অনুমোদন বেআইনি। রাজ্যপাল কেন এতে অনুমোদন দিয়েছে, সেটাও বিস্ময়কর। এই গ্রেফতারি বেআইনি।
যদিও, সিবিআই-এর দাবি, তারা আইন অনুযায়ী কাজ করেছে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, আইনে একটা সংস্থান রয়েছে যে, রাজ্যপালের কাছ থেকেও অনুমতি নেওয়া যেতে পারে। ফলে, আইনের পরিধির মধ্যে থেকেই কাজ করেছে সিবিআই বলে দাবি গোয়েন্দাদের।