কলকাতা: চার বিধায়ককে যে পন্থায় গ্রেফতার করেছে সিবিআই, তা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে উল্লেখ করলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। 


সোমবার সকালে তৃণমূলের তিন বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রকে গ্রেফতার করে নিজাম প্যালেসে তুলে নিয়ে আসে সিবিআই। সেখানে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এই তিনজনের মধ্যে ২ জন আবার রাজ্যের মন্ত্রীও বটে। 


সিবিআই সূত্রের খবর, রাজ্যপালের কাছ থেকে অনুমতি মেলার পর নারদকাণ্ডে চার অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চারজনকে আজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই। 


এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গোটা গ্রেফতারি প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলে উল্লেখ করেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, গ্রেফতারির বিষয়ে তাঁর কাছে অনুমতি তো দূর, জানানো পর্যন্ত হয়নি।


বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সাংসদকে গ্রেফতার করতে হলে যেমন লোকসভার স্পিকারের অনুমতি প্রয়োজন, ঠিক তেমনই বিধায়ককে গ্রেফতার করতে হলে, বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি লাগেই। 


বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন,  বিধায়ককে গ্রেফতার করতে হলে, বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। এমনকী, তাঁকে জানানো পর্যন্ত হয়নি বলেও জানিয়ে রাখেন অধ্যক্ষ।


তিনি যোগ করেন, এর আগে, নারদ মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট সুষ্পষ্টভাবে সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিল, স্পিকারের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না।  রাজ্যের তরফে বলা হয়েছিল, কোনও অনুমোদন  নেওয়া হয়নি। কোনও যোগাযোগও করা হয়নি। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বলেছিল, স্পিকাররে অনুমতি নিতে।


বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সাংসদকে গ্রেফতার করতে হলে যেমন লোকসভার স্পিকারের অনুমতি প্রয়োজন, ঠিক তেমনই বিধায়ককে গ্রেফতার করতে হলে, বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি লাগেই। 


পাশাপাশি, রাজ্যপালের অনুমোদনকেও বেআইনি বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, অধ্যক্ষের পদ খালি থাকলে অন্য কথা। কিন্তু, এক্ষেত্রে তা খাটেনি। ফলত, রাজ্যপালের অনুমোদন দেওয়া বেআইনি। 


তিনি বলেন, আমি জানি না কোন অজ্ঞাত কারণে, সিবিআই রাজ্যপালের কাছে গেল। এমন নয় যে স্পিকারের পদ খালি ছিল। এভাবে সিবিআই গ্রেফতার করতে পারে না। 


অধ্যক্ষের মতে, রাজ্যপাল কেন এতে অনুমোদন দিয়েছে, সেটাও বিস্ময়কর। তিনি বলেন, যেভাবে চার বিধায়ককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই, তা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। কারণ, অনুমোদনটাই বেআইনি। 


যদিও, সিবিআই-এর তরফে পাল্টা সাফাই, কোনও বেআইনি কাজ হয়নি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মতে, আইনেই একটি সংস্থান রয়েছে যে, রাজ্যপালের কাছ থেকেও অনুমোদন নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে তারা সেটাই অনুসরণ করে গ্রেফতার করেছে।