কলকাতা: নিউটাউনের সুখবৃষ্টি আবাসনে এনকাউন্টারে জখম হন স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের ইন্সপেক্টর কার্তিকমোহন ঘোষ। তাঁর বাঁ কাঁধ ফুটো করে বেরিয়ে যায় গুলি।
বর্তমানে সল্টলেক আমরিতে ভর্তি ওই পুলিশ অফিসার। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। যে অংশে আঘাত, আজ তার এমআরআই হবে।
পাশাপাশি হবে ইএমজি পরীক্ষাও। বুলেট ইনজ্যুরিতে নার্ভের কতটা ক্ষতি হয়েছে জানতে এই পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত।
আদতে নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দা হলেও, কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে এই আবাসনেই ভাড়া থাকতেন তিনি। বুধবার এসটিএফ-এর অপারেশনেও সামিল ছিলেন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার এই অফিসার।
গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে সুখবৃষ্টি আবাসনে লুকিয়ে থাকা পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টারকে ধরতে বুধবার অভিযান চালায় রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।
দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় গুলির লড়াই। শ্যুটআউটে মৃত্যু হয় পাঞ্জাবের কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার এবং যশপ্রীত সিং খাড়ারের। রাত ১টার পর দুই গ্যাংস্টারের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত দু’জনেই পঞ্জাবের বাসিন্দা কুখ্যাত গ্যাংস্টার ৪০টিরও বেশি মামলায় তাদের খুঁজছিল পুলিশ। গতকাল ঘটনাস্থল থেকে ৫টি অত্যাধুনিক অটোমেটিক পিস্তল, ৮৯ রাউন্ড গুলি, ৭ লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভরত কুমার নামে লুধিয়ানায় ধৃত এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমেই পঞ্জাব থেকে কলকাতায় এসেছিল জয়পাল ও যশপ্রীত।
২৩ মে থেকে নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল একটি এজেন্সির মাধ্যমে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ইতমধ্যেই ফ্ল্যাটের মালিকের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
সিআইটি রোডের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি পেশায় ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তি হয়েছিল ১১ মাসের, জানিয়েছেন ফ্ল্যাটের মালিকের ভাই।
অন্যদিকে, নিহতদের সঙ্গে মিলেছে আন্তর্জাতিক মাদক-চোরাচালান চক্রের যোগও। পুলিশ সূত্রে খবর, পাক সীমান্ত দিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাদক পাচার করত তারা।
গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন আবাসনের বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় ১০ হাজারের ওপর ফ্ল্যাট থাকলেও আবাসনের সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা নেই। এর পাশাপাশি বাসিন্দাদের দাবি, ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে।
আবাসন কর্তৃপক্ষের অনুমতির পাশাপাশি প্রয়োজন পুলিশ ভেরিফিকেশন। এক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গতকালের ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত সুখবৃষ্টি আবাসনের বাসিন্দারা।