কলকাতা: গভীর রাতে নিউটাউনের সুখবৃষ্টি আবাসন থেকে উদ্ধার হল পঞ্জাবের দুই গ্যাংস্টারের দেহ। আজই দেহের ময়নাতদন্ত হবে। এদিকে, এখনও বি-১৫৩ নম্বর টাওয়ার ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আজ থেকে ওই আবাসনে ঢোকা-বেরোনোয় বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। 


সুখবৃষ্টি আবাসনে পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে লুকিয়ে থাকা দুই দুষ্কৃতীকে ধরতে অভিযান চালায় রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। হাড় হিম করা এনকাউন্টারে পঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার এবং যশপ্রীত সিং খাড়ারের মৃত্যু হয়। 


নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে লুকিয়ে রয়েছে পাঞ্জাবের কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার। গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে বুধবার স্পেশাল অপারেশন শুরু করে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। 


পুলিশের দাবি, বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ দুই গ্যাংস্টারের লোকেশন লক করা হয়। এরপর গোটা এলাকা রেকি করে পুলিশ।


বুধবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ সুখবৃষ্টি আবাসনের বি ব্লকের গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে স্পেশাল পুলিশ ফোর্স। 


প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, হঠাত্‍ই পাঁচতলার ওপরের ফ্ল্যাটের ব্যালকনি ও তার পাশের লবি থেকে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে গ্যাংস্টাররা। 


প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও, পাল্টা গুলি চালান এসটিএফ-এর অফিসাররা। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় গুলির লড়াই। শ্যুটআউটে মৃত্যু হয় পাঞ্জাবের কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার এবং যশপ্রীত সিং খাড়ারের। 


কার্তিকমোহন ঘোষ নামে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের এক ইন্সপেক্টরের বা কাধ ফুটো করে বেরিয়ে যায় গুলি। আদতে নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দা হলেও, কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে এই আবাসনেই ভাড়া থাকতেন তিনি। বুধবার এসটিএফ-এর অপারেশনেও সামিল ছিলেন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার এই অফিসার। 


পুলিশ সূত্রে খবর,  মৃত দু’জনেই পঞ্জাবের বাসিন্দা কুখ্যাত গ্যাংস্টার ৪০টিরও বেশি মামলায় তাদের খুঁজছিল পুলিশ।  এদিন ঘটনাস্থল থেকে ৫টি অত্যাধুনিক অটোমেটিক পিস্তল, ৮৯ রাউন্ড গুলি, ৭ লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। 


গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন আবাসনের বাসিন্দারা। রাত ১টার পর দুই গ্যাংস্টারের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 


পুলিশ সূত্রে খবর, ভরত কুমার নামে লুধিয়ানায় ধৃত এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমেই পঞ্জাব থেকে কলকাতায় এসেছিল জয়পাল ও যশপ্রীত। 


২৩ মে থেকে নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল একটি এজেন্সির মাধ্যমে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ইতমধ্যেই ফ্ল্যাটের মালিকের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। 


সিআইটি রোডের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি পেশায় ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তি হয়েছিল ১১ মাসের, জানিয়েছেন ফ্ল্যাটের মালিকের ভাই। 


অন্যদিকে, নিহতদের সঙ্গে মিলেছে আন্তর্জাতিক মাদক-চোরাচালান চক্রের যোগও। পুলিশ সূত্রে খবর, পাক সীমান্ত দিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাদক পাচার করত তারা।